শরীরের সদকা আদায় হয় যে আমলে
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের প্রতিটি অঙ্গে নিখুঁত ও আশ্চর্যজনক অনেকগুলো জোড়া রয়েছে। শরীরের এই জোড়াগুলো মানুষের জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অপূর্ব দান। এই জোড়াগুলো না থাকলে প্রাত্যহিক জীবনে প্রয়োজনীয় ও প্রত্যাশিত কাজে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে নাড়াচাড়া করা সম্ভব হতো না।
বান্দার জন্য এসব শারীরিক জোড়ার কারণে আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা আদায় করা অত্যন্ত জরুরি ও অপরিহার্য। এই কৃতজ্ঞতা আদায়ের সহজ উপায় হল- প্রতিটি জোড়ার বিনিময়ে প্রতিদিন সদকা করা।
বিজ্ঞাপন
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরীরের এই জোড়াগুলোর সদকা আদায়ের অত্যন্ত সহজ ও উপযোগী কিছু আমলের কথা বলেছেন। এ বিষয়ে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেহ যখন সূর্য উঠে মানুষের শরীরের প্রত্যেক জোড়ার সদকা দেয়া অবশ্য কর্তব্য। দু’জন মানুষের মাঝে সুবিচার করা হচ্ছে সদকা, কোন আরোহীকে তার বাহনের উপর আরোহন করতে বা তার উপর বোঝা উঠাতে সাহায্য করা হচ্ছে সাদকা, ভাল কথা হচ্ছে সাদকা, নামাজের জন্য চলতে গিয়ে প্রত্যেক কদমে একটি করে সদকা এবং কষ্টদায়ক জিনিস রাস্তা থেকে সরানো সদকা।’(বুখারি, ২৯৮৯, মুসলিম, হাদিস, ১০০৯)
অপর এক হাদিসে হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর সূত্রে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, ‘তোমাদের মধ্যে প্রত্যেকের প্রত্যেক (হাড়ের) জোড়ার পক্ষ থেকে প্রাত্যহিক সদকা রয়েছে। সুতরাং প্রত্যেক তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ বলা) সদকা, প্রত্যেক তাহমীদ (আলহামদু লিল্লাহ বলা) সদকা, প্রত্যেক তাহলীল (লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা) সদকা, প্রত্যেক তাকবীর (আল্লাহু আকবার বলা) সদকা এবং ভালো কাজের আদেশ প্রদান ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সদকা। এ সব কাজের পরিবর্তে চাশতের দু’রাকাত নামাজ যথেষ্ট হবে।’ (মুসলিম, হাদিস, ১৭০৪)
প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, হাদিসে বর্ণিত পদ্ধতিতে শরীরের প্রতিটি জোড়ার হক আদায় করা।
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদ্রাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল