প্রবীণ আলেম ও রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদিস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক কাসেমী

আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ, সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে ওয়াজ-মাহফিল। শীত মৌসুমে দেশের শহর-গ্রামে মাহফিলের আয়োজন করা হয় একটু ঘটা করেই। বক্তার কথা শোনে নিজের ভেতর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। সাম্প্রতিককালে মাহফিলের মঞ্চগুলোতে কিছু কিছু বক্তার আলোচনা, কথা বলার ভঙ্গি- বিভিন্ন সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি করেছে। 

এমন বক্তাদের বিষয়ে শুরু থেকেই সরব ধর্মীয় সচেতন মহল। শীর্ষ ও প্রথম সারির আলেমরা বক্তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে সবসময় সতর্ক করছেন। এবার সরাসরি এমন বক্তাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রবীণ আলেম ও রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার (বারিধারা মাদরাসা) শায়খুল হাদিস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক কাসেমী। 

মাহফিল আয়োজকদের প্রতি অনুরোধ করে আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, ‘মাস্তান টাইপে’র বক্তাকে কোনোদিন ওয়াজ-মাহফিলে দাওয়াত দেবেন না। একইসঙ্গে যারা মানুষের তৃপ্তি মেটায় এবং জলসাকে (মাহফিল) বিনোদন বানায়, এদেরকেও দাওয়াত দেবেন না’।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এমন মন্তব্য করতে শোনা যায় তাকে।

তিনি মাহফিল আয়োজকদের উদ্দেশে আরও বলেছেন, ‘ফালতু ওয়ায়েজকে (ব্ক্তা) দাওয়াত দিয়ে যে টাকা দেবেন- ওটাও হারাম, আর যে মজলিস করলেন, এটাতেও আল্লাহর লা’নত ও গজব পড়বে, এখানে আল্লাহর কোনো রহমত আসবে না’।

তিনি আয়োজকদের সতর্ক করে বলেন, আর যদি এরকম বক্তাদের দাওয়াত দিয়ে ওয়াজ করান, তাহলে যতক্ষণ তার ওয়াজ চলবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর লানত বর্ষণ হবে।

প্রবীণ এই আলেম বলেন, অনেক বক্তা আছেন, রাতে ওয়াজ করেন কিন্তু ইশার নামাজও পড়েন না, ফজরও পড়েন না। অথচ এদেরকে আপনারা ‘আল্লাহর বড় ওলী’ হিসেবে দাওয়াত দিয়ে আনছেন।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এসব বক্তাদের মধ্যে যে যত বড় জাহিল, তার বাজেট তত বেশি। যত জাহিল, তাদের প্রতি আয়োজকদের খাহেশ তত বেশি।

মাহফিলের পবিত্র এ ময়দান রক্ষায় তিনি এমন সব বক্তাকে দাওয়াত দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যারা প্রকৃতপক্ষেই দ্বীনের আলোচনা করেন। সেক্ষেত্রে অনেক মানুষের উপস্থিতির দরকার নেই বলেও মত দেন আল্লামা ওবায়দুল্লাহ ফারুক।

তিনি বলেন, (এরকম বক্তা দাওয়াত দিলে) মাহফিলে যদি মাত্র ৫০০ মানুষও আসে আলহামদুলিল্লাহ। ৫ লাখ মানুষের কোনো প্রয়োজন নেই।

সবশেষে এই আলেম বলেন, যদি আমরা এই লাইনে মেহনত করতে পারি, তাহলে এই জাতি গঠনে খুবই ফলপ্রসু কাজ হবে ইনশাআল্লাহ।

এনটি