প্রতীকী ছবি

সাজসজ্জা, সৌন্দর্যের প্রতি আকর্ষণ নারীর স্বভাবজাত। সাজ-সজ্জার প্রতি নারীর এই দুর্বলতার কথা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা তুলে ধরেছেন এভাবে-

 اَوَ مَنۡ یُّنَشَّؤُا فِی الۡحِلۡیَۃِ وَ هُوَ فِی الۡخِصَامِ غَیۡرُ مُبِیۡنٍ 

আর যে অলংকারে লালিত পালিত হয়; এবং বিতর্ককালে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রদানে অক্ষম। ( সূরা যুখরুফ, (৪৩), আয়াত, ১৮)

সৌন্দর্যের প্রতি নারীর আকর্ষণ 

এই আয়াতে নারীর দুইটি গুণের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তার একটি হলো - তাদের লালন-পালন হয় অলংকারে ও সাজ-সজ্জায়। অর্থাৎ, সুন্দর ও মনোরম জিনিসের প্রতি তাদের মনের আকর্ষণ। নারীরা নিজ দেহের সৌন্দর্য ও সাজ-সজ্জা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আর তাদের ভরণ-পোষণ করতে হয় পুরুষকে।

ইসলাম নারীকে শালীন এবং বৈধ উপায়ে মাহরাম পুরুষদের সামনে সজ্জার অনুমতি দিয়েছে এব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই ইসলামে। তবে বেপর্দা অবস্থায় পরপুরুষের সামনে নিজেদের দেহ, পোশাক বা অলঙ্কারাদির সৌন্দর্য প্রকাশের অনুমতি নেই ইসলামে। 

মুসলিম নারীর বৈশিষ্ট্য

মুসলিম নারীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- লাজুকতা, শালীনতা, সচ্চরিত্রা হওয়া, পুণ্যবতী ও ধৈর্যশীলা হওয়া এবং পরপুরুষ থেকে নিজেকে সংরক্ষিত করে রাখা। বর্তমান সময়ে নারীরা সাজসজ্জা-সৌন্দর্য প্রকাশের জন্য লিপস্টিক, নেইল পলিশ জাতীয় বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকে। এসব ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো-

লিপস্টিক ব্যবহারের বিধান

হারাম বস্তু ও ক্ষতিকর পদার্থমুক্ত লিপস্টিক, মেকআপ, স্নো, পাউডার প্রভৃতি ব্যবহার বৈধ। নিজেকে সর্বদা সুরভিত করে রাখায় নারীত্বের একধরনের আনন্দ আছে। এ জন্য স্বামীর কাছে যাওয়ার আগে অ্যালকোহল ও হারাম স্পিরিটমুক্ত সেন্ট-পারফিউম ব্যবহার নারীর জন্য জায়েজ, বরং উত্তম। নখে নেইলপলিশ ব্যবহারও জায়েজ। তবে অজুর আগে তা তুলে ফেলা আবশ্যক। না তুললে অজু হবে না। এটি ব্যবহারের উত্তম সময় হলো মেয়েদের মাসের বিশেষ দিনগুলো (পিরিয়ড)। কারণ, তখন অজু-গোসল করতে হয় না।

তবে মেয়েদের হাত-পা ও নখ সব সময় মেহেদি দিয়ে রাঙিয়ে রাখা উত্তম। কারণ এতে স্বামীর দাম্পত্য জীবনে তৃপ্তি আনে। আর অজু-গোসলের সময় তা কষ্ট করে তুলে ফেলার ঝামেলাও নেই। এ ব্যাপারে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের সবাই একমত যে, মেহেদি চামড়ার মাঝে পানি প্রবেশ করতে বাঁধা দেয় না। তবে নেইল পলিশ এর বিপরীত, অর্থাৎ, এতে এক ধরনের আবরণ থাকার কারণে তা চামড়ার পানি পৌঁছাতে বাঁধা দেয়। ( খোলাসাতুল ফাতওয়া, ৪/৩৭৭, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/২)

শায়খ উসাইমিন রহ. বলেন, ‘ঠোটে লিপস্টিক দিতে কোনো আপত্তি নেই। কারণ, মূল বিধান হল, বৈধতা; যতক্ষণ এতে হারাম হওয়ার মতো কোনো কিছু পাওয়া যাবে না ততক্ষণ ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু যদি বুঝতে পারা যায় যে, লিপস্টিকে ক্ষতিকর কোনো পদার্থ দেওয়া হয়েছে যা ঠোঁটের জন্য ক্ষতিকর (ঠোঁটকে শুকিয়ে ফেলে, ঠোঁটের আর্দ্রতা ও তৈলাক্ততা দূর করে দেয়)— এ ধরণের অবস্থার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং এর থেকে দূরে থাকতে হবে। (ফাতাওয়া মানারুল ইসলাম (৩/৮৩১)

এনটি