প্রতীকী ছবি

মানুষকে কষ্ট দিয়ে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অনৈতিকভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি ইসলামে নিন্দনীয় এবং নিষিদ্ধ কাজ। যেই ব্যবসায়ীরা অনৈতিকভাবে দাম বাড়িয়ে দেয় হাদিসে তাদের সম্পর্কে সতর্কবার্তা ঘোষণা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পণ্যদ্রব্য আটক করে অধিক মূল্যে বিক্রয়কারী অবশ্যই পাপী।’ (মিশকাত)

অনৈতিকভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর কারণে আল্লাহ তায়ালা মহামারী এবং দরিদ্রতার মতো বড় বড় শাস্তি দিয়ে থাকেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘কেউ যদি মুসলমানদের থেকে খাদ্যশস্য আটকিয়ে রাখে, তবে আল্লাহ তায়ালা তার উপর মহামারী ও দারিদ্র্যতা চাপিয়ে দেন।’ (ইবনে মাজাহ, বাইহাকি)

দাম বাড়ানোর জন্য যারা পণ্য মজুদ করে এবং যারা তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে দ্রব্যসংকট সৃষ্টি করে, তাদের জন্য ভয়ানক শাস্তি রয়েছে পরকালে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! নিশ্চয় পণ্ডিত ও সংসার বিরাগীদের অনেকেই মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে। আর তারা আল্লাহর পথে বাধা দেয় এবং যারা সোনা ও রুপা জমা করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। সেদিন জাহান্নামের আগুনে ওগুলোকে উত্তপ্ত করা হবে। অতঃপর ওগুলো দিয়ে তাদের ললাটে, পার্শ্বদেশে এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে, আর বলা হবে- এটি হচ্ছে ওটাই, যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করে রেখেছিলে। সুতরাং এখন নিজেদের সঞ্চয়ের স্বাদ গ্রহণ কর।’ (সূরা তওবা, ৩৪-৩৫)। 

এছাড়া ইসলাম অধিক মুনাফার লোভে মজুদদারি নিষিদ্ধ করেছে। মামার ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ফাজালা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘পাপাচারী ছাড়া অন্য কেউ মজুতদারি করে না।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ৪০ রাত পর্যন্ত খাদ্যদ্রব্য মজুদ রাখে, আল্লাহর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক থাকে না।’ অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমদানিকারক রিজিকপ্রাপ্ত হয়, আর মজুতদার হয় অভিশপ্ত।’ (সুনানে দারেমি, হাদিস, ২৪৩৩)। 

তাই ব্যবসায়ীদের উচিত ক্রয়-বিক্রয়ে সহজতা অবলম্বন করা। যারা সাধারণ মানুষের কেনাবেচায় সহজতা করে তাদের জন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ এমন একজন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যে ক্রেতা-বিক্রেতা, বিচারক ও বিচারপ্রার্থী অবস্থায় সহজতা অবলম্বনকারী ছিল।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস, ৪৬৯৬)।

এনটি