ছবি : সংগৃহীত

জামাতে নামাজ পড়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে ইসলামে। জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া একাকী নামাজ পড়ার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি মর্যাদার।’ (বুখারি, হাদিস, ৬৪৫, মুসলিম, হাদিস, ৬৪০)

জামাতে ইমামের অনুসরণ

জামাতে নামাজ পড়ার জন্য একজন ইমামের অনুসরণ আবশ্যক। মসজিদ বা জামাতের নামাজে যারা ইমামতি করেন তাদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। একই সঙ্গে দায়িত্ব পালনে কোনো ত্রুটি হলেও আল্লাহর দরবারে জবাবদিহিতা করতে হবে। 

ইমামের দায়িত্ব ও মর্যাদা

এ বিষয়ে এক হাদিসে হজরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সঠিক সময়ে লোকদের নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করেছে, এ জন্য সে (ইমাম) নিজে ও মুকতাদিরাও পরিপূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। অপরপক্ষে যদি কোনো সময় ইমাম সঠিক সময়ে নামাজ আদায় না করে তবে এজন্য সে দায়ী হবে; কিন্তু মুকতাদিরা পরিপূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। -(আবু দাউদ, ৫৮০, ইবনু মাজাহ, ৯৩৬, আহমাদ ৪/১৪৫, ২০১)

ইমামতির যোগ্য ব্যক্তি

একজন ইমামের ভেতর বেশ কিছু গুণ থাকতে হয়। তাকে ভালো কোরআন তিলাওয়াত জানতে হয়, নামাজের নিয়ম-কানুন ও মাসয়ালা অন্য সবার থেকে বেশি জানতে হয়। ইমামের জন্য খোদাভীরু হওয়াও আবশ্যক। কোথাও জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে যার ভেতর এই গুণগুলো থাকবে, তিনিই ইমাম হওয়ার বেশি যোগ্য।

ইমামের পেছনে দাঁড়ানোর যোগ্য যারা

কোনো ইমাম যখন নামাজের জন্য দাঁড়াবেন তখন তার একেবারে পেছন বরাবর কারা দাঁড়ানোর বেশি যোগ্য এ বিষয়ে শরীয়তের নির্দেশনা রয়েছে। 

ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, জামাতে নামাজ শুরুর পর অনেক সময় প্রাকৃতিক কারণে ইমাম অসু্স্থ হয়ে পড়তে পারেন, অথবা কোনো কারণে তার অজুও চলে যেতে পারে, কখনো এমন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি তৈরি হলে মুসল্লিদের বাকি নামাজ যেন ‍সুষ্ঠূভাবে শেষ হয়, এজন্য ইমামের একেবারে কাছে দাঁড়ানোর যোগ্য ব্যক্তি হলেন - যিনি নামাজের মাসয়ালা-মাসায়েল সম্পর্কে সব থেকে ভালো জানেন, যেন ইমামের কোনো ভুল হলে তিনি ধরতে পারেন এবং ইমাম নামাজ পড়ানোর সময় কোনো কারণে নামাজ ছাড়তে বাধ্য হলে ইমামের কাছাকাছি দাঁড়ানো ব্যক্তি মুসল্লিদের নিয়ে বাকি নামাজ শেষ করে ফেলতে পারেন। 

আলেমদের মতে, মাসয়ালা-মাসায়েল সম্পর্কে জানা নেই এমন সাধারণ মুসল্লিদের ইমাম বরাবর পেছনে দাঁড়ানো উচিত নয়। জ্ঞানী (আলেম, হাফেজ, কারি) মানুষদের জন্য ইমামের পাশের জায়গা ছেড়ে রাখা উচিত।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সেই লোকদেরকে আমার কাছে দাঁড়ানো উচিত, যারা জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান। এরপর তারা যারা তাদের চেয়ে কম জ্ঞানের। এরপর তারা যারা তাদের থেকে কম জ্ঞানের। আর তোমরা বাজারের ফালতু কথা (হইচই) থেকে দূরে থাক।’ (মুসলিম, আহমাদ, মুসনাদ, আবু দাউদ, সুনানে তিরমিজি, সুনান, মিশকাত, ১০৮৯)

এনটি