চিরনিদ্রায় শায়িত ময়মনসিংহের প্রবীণ আলেম মুফতি ফজলুল হক
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ময়মনসিংহের সর্বজনমান্য প্রবীণ আলেম মুফতি ফজলুল হক (৭৮)। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর ময়মনসিংহ নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পরিবারের সিদ্ধান্তে ঢোলাদিয়ায় গলগণ্ডা গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ইন্তেকাল করেন মুফতি ফজলুল হক। প্রবীণ এ আলেমের মৃত্যুর খবরে ময়মনসিংহ অঞ্চলের আলেম-উলামা ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিজ্ঞাপন
আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে তার জানাজায় বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। জানাজায় ইমামতি করেন বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সহকারী মহাপরিচালক ও মরহুমের শ্যালক মাওলানা যুবায়ের আহমেদ।
এসময় ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর মজলিসে শুরার সভাপতি আল্লামা আব্দুর রহমান হাফেজ্জি, মজলিসে আমেলার সভাপতি আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, বড় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুল হক, জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আনোয়ারুল হকসহ বিভিন্ন মাদসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মুফতি ফজলুল হক যুগশ্রেষ্ঠ মনীষীদের সান্নিধ্যপ্রাপ্ত ও স্নেহধন্য শাগরেদ ছিলেন। ইসলামি অঙ্গনে তিনি নিজেও ছিলেন প্রবাদতুল্য আলেম।
দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব, ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর ফতোয়া বোর্ডের সভাপতি, জামিয়া ইসলামিয়া সেহড়া-মোমেনশাহীর শায়খুল হাদিস ও মুক্তাগাছা আব্বাছিয়া কামিল মাদরাসায় প্রধান মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আলিয়া মাদরাসায় কামিল পাস করে রাজধানীর লালবাগ মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষে উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে যান৷
শায়খ জাকারিয়া (রহ.)-এর এই শাগরেদ শিক্ষাজীবন শেষ করে মুক্তাগাছা আব্বাসিয়া আলিয়া মাদরাসায় কর্মজীবন শুরু করেন। একই সময়ে তিনি জামিয়া আশরাফিয়া খাগডহরেও হাদিসের দরস দিয়েছেন।
মুফতি ফজলুল হক সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যস্থ ছিলেন। তথ্য ও যুক্তিভিত্তিক মাসয়ালা ও ফতোয়া উপস্থাপনে তার পারঙ্গমতা ছিলো প্রবাদতুল্য। মুফতি ফজলুল হককে বলা হয়- কিতাবপত্রের মানুষ। এককভাবে তার বাসার কিতাব সংগ্রহ ঈর্ষণীয়৷ মুফতি ফজলুল হক তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক ছিলেন। করোনাকালে তার এক ছেলে ইন্তেকাল করে।
উবায়দুল হক/এনটি