প্রতীকী ছবি

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায় করাই পবিত্র কোরআনের বিধান। যত ব্যস্ততাই থাক না কেন, সময়মতো নামাজ আদায়ের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নামাজ মুমিনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা, আয়াত, ১০৩)

ইচ্ছে করে অবহেলায় মানা

তাই কোনো ধরনের ওজর বা অপারগতা ছাড়া কোনো নামাজ সময় চলে যাওয়ার পর আদায় করা— জায়েজ নেই। কেউ ইচ্ছাকৃত সময়মতো নামাজ আদায় না করলে, তাকে গুনাহগার হতে হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৯৬)

আল্লাহ জিম্মাদারি উঠিয়ে নেন

ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। কারণ, ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দিলে মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তুলে নেন। মুআজ (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) আমাকে দশটি নসিহত করেন, তার মধ্যে বিশেষ একটি হলো, তুমি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ কোরো না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করল, তার ওপর আল্লাহর কোনো জিম্মাদারি থাকল না।’ (আহমাদ: ৫/ ২৩৮)

তবে নিতান্ত ভুলবশত, অপারগ হয়ে কিংবা বিশেষ কারণে কোনো ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে না পারলে— পরবর্তী সময়ে এই নামাজ আদায় করে দিতে হয়। আর এই নামাজ আদায়কে কাজা নামাজ বলা হয়। ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে, সে নামাজের কাজা আদায় করা আবশ্যক। সুন্নত কিংবা নফল নামাজ আদায় করা না গেলে, সেটার কাজা আদায় করতে হয় না।

কাজা নামাজের সংখ্যা মনে না থাকলে...

কারো যদি একাধিক ফরজ নামাজ কাজা হয়ে যায় এবং তার মনে না থাকে যে, জীবনে কত রাকাত নামাজ কাজা হয়ে গেছে তাহলে তিনি কীভাবে এই নামাজের কাজা আদায় করতেন তা নিয়ে সন্দিাহান হয়ে পড়েন। যেমন একজন প্রশ্ন করেছেন-

‘আমি প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায় করার চেষ্টা করছি। কিন্তু মাঝে মাঝে অলসতার কারণে কিছু নামাজ পড়া হয়নি। এখন সবগুলো নামাজ কাজা করার ইচ্ছা করেছি। অথচ দিন-তারিখও স্মরণে নেই এবং কত ওয়াক্ত পড়া হয়নি— তাও নির্দিষ্টভাবে জানা নেই। তাই  জানতে চাচ্ছি, আমি কীভাবে নামাজগুলো কাজা করব? 

যেভাবে পড়বেন

এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে আলেমরা বলেন, কাজা হয়ে যাওয়া নামাজগুলোর দিন-তারিখ স্মরণ না থাকলে তা কাজা করার ক্ষেত্রে এভাবে নিয়ত করবেন যে, আমার জীবনের অনাদায়ী প্রথম ফজরের ফরজ আদায় করছি। একইভাবে অনাদায়ী প্রথম জোহরের ফরজ নামাজ আদায় করছি। এভাবে অন্যান্য নামাজের ক্ষেত্রে নিয়ত করবেন। যখনি কাজ আদায় করবেন, এভাবে নিয়ত করে নেবেন।

আর কত ওয়াক্ত নামাজ কাজ হয়েছে এর সংখ্যা যেহেতু এখন নির্দিষ্টভাবে আপনার জানা নেই, তাই এক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অনুযায়ী পড়ে নেবেন, অর্থাৎ এভাবে নামাজ পড়তে পড়তে যখন মনে হবে যে, জীবনের সব কাজা নামাজ আদায় করা শেষ হয়েছে, তখন থেকে আর কাজা আদায় করতে হবে না। (ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪৫২; মাজমাউল আনহুর ৪/৪৭৭; রদ্দুল মুহতার ২/৭৬)

এনটি