মহামারি থেকে বাঁচতে যে দোয়া পড়বেন
দেশে করোনাভাইরাস কভিড-১৯ এর প্রকোপ আবারও বেড়ে চলেছে। বিশ্বব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞ চালানো এই মহামারির সংক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রাতিষ্ঠানিক, সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে নানা উদ্যোগ ও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সবার কম-বেশি জানা যে, অধিকাংশ মহামারি-ই সংক্রামক। তাই বহু হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) মহামারির সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। আক্রান্ত অঞ্চলে যাতায়াত নিষিদ্ধ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মহামারি ও সংক্রমণের সময় মুমিন যথাযথ স্বাস্থবিধি অবলম্বন করবে; পাশাপাশি ঈমান ও ইখলাসের সঙ্গে ধৈর্য ধারণ করবে— এটাই নিয়ম। তাই মহামারির ব্যাপারে মহানবী (সা.) বলেন, ‘কোথাও মহামারি দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে— সে জায়গা ছেড়ে চলে এসো না। আবার কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করে থাকলে, সে জায়গায় গমন করো না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১০৬৫)
একটি বর্ণনায় দেখা গেছে, সিরিয়ায় মহামারি দেখা দিলে ওমর (রা.) তার গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সফর স্থগিত করেন। (বোখারি, হাদিস : ৫৭২৯)
তাই হাদিসের নির্দেশনা অবলম্বনের পাশাপাশি চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসরণে অন্যজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ, হাত মেলানো ও কথাবার্তায় অত্যন্ত সতর্কতা জরুরি।
মহামারি থেকে বাঁচার দোয়া
সংক্রমণ ও মহামারিতে সুরক্ষার জন্য রাসুল (সা.) দোয়া শিখিয়েছেন। হাদিসে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবে ‘বিসমিল্লা-হিল্লাজি লা ইয়াদ্বুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়াহুয়াস সামি উল আলিম’। সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি আকস্মিক কোনো বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর আচমকা কোনো বিপদ আসবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৮৮)
দোয়ার অর্থ : ‘আল্লাহর নামে যার নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।’
আরেকটি দোয়ায় রয়েছে—
اللهم إني أعوذ بك من البرص والجنون والجذام ومن سيئ الأسقام
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনু-নি, ওয়াল জুজামি, ওয়া মিন সাইয়িইল আসকাম।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কুষ্ঠরোগ, মস্তিষ্কের বিকৃতি ও সব ধরনের দুরারোগ্য থেকে মুক্তি চাচ্ছি।
(আদু দাউদ, হাদিস : ৫৪৯৩)
মহামারিতে মারা গেলে ব্যক্তি শহীদ
মহানবী (সা.) মহামারিতে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে শহীদ বলেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, ‘পাঁচ প্রকার মৃত শহীদ মহামারীতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত এবং যে আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করেছে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৮২৯)
আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মহামারির কারণে মারা যাওয়া প্রতিটি মুসলিমের জন্য শাহাদাত।’ (বোখারি, হাদিস : ২৮৩০)