ছবি : সংগৃহীত

প্রকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়, বৃষ্টি, বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অনেক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। 

দৈনিক  পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতেই আদায় করে থাকেন পুরুষেরা। বিনা কারণে জামাত ছেড়ে দেওয়া বড় গুনাহ। নবীজি (স.) কখনও জামাত তরক করতেন না। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় যখন তিনি হাঁটতে পারতেন না, তখনও দুই সাহাবির কাঁধে ভর করে পা টেনে টেনে নামাজের জামাতে হাজির হয়েছেন। জামাতবিহীন একা একা নামাজ পড়েননি। যে ব্যক্তি জামাত ত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে গুনাহগার হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৬৪)

কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কখনো মসজিদ ডুবে গেলে বা পানিতে পূর্ণ হয়ে গেলে সেখানে নামাজ পড়তে হবে না। আশপাশের শুকনো এবং পানি নেই এমন জায়গায় রুকু সেজদাসহ নামাজ আদায় করে নিতে হবে। মসজিদ বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তের কারণে নামাজ বাদ দেওয়া যাবে না। কারণ, একজন মুসলিমের জন্য কোনো অবস্থাতেই নামাজ ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না। কেউ এমন করলে পরকালে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বেনামাজিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের জিজ্ঞাসা করা হবে— ‘কেন তোমরা সাকার নামক জাহান্নামে এলে? তারা বলবে, আমরা তো নামাজি ছিলাম না এবং আমরা মিসকিনদের খাবার দিতাম না; বরং আমরা সমালোচনাকারীদের সঙ্গে সমালোচনায় নিমগ্ন থাকতাম। এমনকি আমরা প্রতিদান দিবসকে (কেয়ামত) অস্বীকার করতাম। আর এভাবেই হঠাৎ আমাদের মৃত্যু এসে গেল।’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত : ৩৮-৪৭)

ঝড়, বৃষ্টি, বন্যার সময় মসজিদ ডুবে গেলে লক্ষণীয় বিষয় হলো- মসজিদের বাইরে ভালোভাবে রুকু সেজদা দিয়ে নামাজ পড়ার মতো স্থান থাকা অবস্থায় এমন সময়ে মসজিদে এসে পানিতে ইশারা করে নামাজ আদায় করলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। মসজিদে এসে জামাতে অংশগ্রহণ করে নামাজ পড়ার ইচ্ছে থাকার কারণে ইনশাআল্লাহ মসজিদে আসার সওয়াব পাওয়া যাবে। আল্লাহ তায়ালা সওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না। 

(তথ্যসূত্র: নুরুল ইজাহ, ‘সালাত’ অধ্যায়, ‘জামাত’ পরিচ্ছদ: ৭৮; হাশিয়াতুত তাহতাভি আলাল মারাকি: ২৯৯; রদ্দুল মুহতার: ২/২৯২; মাওসুয়াতুল ফিকহিয়া আল কুয়েতিয়াহ: ৪২/৬৩; হাশিয়াতুত তাহতাভি আলাল মারাকি: ২৯৭)

এনটি