প্রতীকী ছবি

শিশুরা অনুকরণ প্রিয় হয়ে থাকে। দেখে দেখে শিখতে পছন্দ করে। শৈশব থেকেই তাদের ভালো কিছুর প্রতি উৎসাহিত করতে হয়। শৈশবেই যেই অভ্যাস করে উঠে পরিণত বয়সে তারই অনুসরণ করতে ভালোবাসে মানুষ। নামাজ গুরুত্বপূর্ণ বিধান। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর থেকে আমৃত্যু নামাজ পড়তে হয়। নামাজ না পড়ার কোনও অবকাশ নেই।

পরিণত বয়সে নামাজ নিয়মিত আদায় করতে এবং নিয়মিত অভ্যাস হিসেবে গড়ে তুলতে শৈশব থেকেই শিশুদের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'সাত বছর বয়স হলে তোমরা তোমাদের সন্তানদের নামাজের জন্য নির্দেশ দাও এবং ১০ বছর হলে (নামাজ না পড়লে) তাদের প্রহার করো । আর তাদের বিছানা পৃথক করে দাও।' (মুসনাদে আহমদ : ৬৭৫৬)।

আরেক হাদিসে মুআয বিন আব্দুল্লাহ বিন হাবীব আল-জুহানী সূত্রে হিশাম বিন সাদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা হিশামের কাছে গেলাম। তিনি তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, শিশু কখন সালাত আদায় করবে? তিনি বললেন, আমাদের এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলতেন তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘যখন সে তার ডানকে বাম থেকে আলাদা করতে পারবে, তখন তাকে সালাতের নির্দেশ দাও’।’ (আবূ দাউদ : ৪৯৭; বাইহাকী, সুনান আল-কুবরা : ৫২৯৬)

‘অর্থাৎ শিশু যখন ডান ও বামের মাঝে পার্থক্য করতে পারবে। আর সাধারণত এ যোগ্যতা সপ্তম বছরে পৌঁছার পরই হয়।’ (আউনুল মা‘বুদ : ২/১৬৫)

বয়ঃসন্ধির বিভিন্ন আলামতে প্রকাশ হয় যে, সন্তানের বয়স ১২/১৩ বা ১৫ বছর হলে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। তখন অবশ্যই নামাজ পড়তে হবে। ঠিকমতো নামাজ না পড়লে আল্লাহর কাছে শাস্তি পেতে হবে। 

কোরআনে কারিমে এসেছে, কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের জিজ্ঞাসা করা হবে— ‘কেন তোমরা সাকার নামক জাহান্নামে এলে? তারা বলবে, আমরা তো নামাজি ছিলাম না এবং আমরা মিসকিনদের খাবার দিতাম না; বরং আমরা সমালোচনাকারীদের সঙ্গে সমালোচনায় নিমগ্ন থাকতাম। এমনকি আমরা প্রতিদান দিবসকে (কেয়ামত) অস্বীকার করতাম। আর এভাবেই হঠাৎ আমাদের মৃত্যু এসে গেল।’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত : ৩৮-৪৭)

প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগেই যেন শিশুরা নামাজে অভ্যস্ত হয়ে উঠে তাই হাদিসে নির্ধারিত বয়স ৭ এবং ১০ থেকে শিশুদের নামাজের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে মা-বাবার। এতে করে তারা শিশুকে ইবাদতে সহায়তার জন্য সওয়াব পাবেন। (ইবনু তায়মিয়াহ, আল ফাতাওয়াল কুবরা ৫/৩১৮; বিন বায, মাজমূ ফাতাওয়া ১৬/৩৭৭)।

এনটি