হারাম টাকায় কিছু কিনে ফেললে কী করবেন?
হারাম উপার্জন মানুষের দুনিয়া আখিরাত ধ্বংস করে দেয়। হারাম উপার্জনের ফলে বাহ্যিকভাবে কিছুটা প্রাচুর্য দেখা গেলেও মূলত তা মানুষের জীবন থেকে বরকত তুলে নেয়।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা, আহার করো আমি তোমাদের যে হালাল রিজিক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহর জন্য শোকর করো, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত করো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৭২) এই আয়াতে মহান আল্লাহ আমাদের জন্য হালাল খাবার, হালাল উপার্জন ফরজ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন আর দান-সদকা বাড়িয়ে দেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৬)
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা বলেন, যে সম্পদের সঙ্গে সুদ মিশ্রিত হয়ে যায়, বেশির ভাগ সময় সেগুলো ধ্বংস হয়, অধিকন্তু আগে যা ছিল, তা-ও সঙ্গে নিয়ে যায়। সুদ ও জুয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়, অজস্র পুঁজির মালিক কোটিপতি দেখতে দেখতে দেউলিয়া ও ফকিরে পরিণত হয়।
যারা সুদভিত্তিক ও হারাম লেনদেনে লিপ্ত, রাসুল (সা.) তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। জাবের (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক ও তার সাক্ষীদ্বয়ের ওপর অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন, এরা সবাই সমান অপরাধী। (মুসলিম, হাদিস : ৩৯৮৫)
হারাম উপার্জন মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। মহান আল্লাহ হারাম উপার্জনকারীদের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও—যদি তোমরা মুমিন হও। অতঃপর যদি তোমরা না করো, তাহলে আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নাও...।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৭৮-২৭৯)
এজন্য হারাম থেকে বেঁচে থাকতে হবে। তবে কেউ যদি কখনো ভুলে হারাম উপায়ে কিছু কিনে ফেলে বা অর্জন করে তাহলে, হারাম উপায়ে অর্জিত টাকা তার প্রকৃত মালিক বা তার ওয়ারিশদের কাছে ফেরত দিতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তকে হারাম টাকায় কেনা জিনিস সদকা করা উত্তম, তবে তার মূল্য সদকা করলেও দায়িত্বমুক্ত হবে। (হেদায়া, ৩/৩৭৬, রদ্দুল মুহতার, ৫/২৩৫, ফাতাওয়ায়ে উসমানি, ৩/১২০)
এনটি