প্রতীকী ছবি

মসজিদ আল্লাহ তায়ালার ঘর। আল্লাহর সামনে নিজেকে সপে দিতে প্রতিদিন পাঁচবার মসজিদে একত্রিত হন মুসলিমেরা। মসজিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। 

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে মহব্বত রাখতে চায়, সে যেন আমাকে ভালোবাসে। যে আমার সঙ্গে ভালোবাসা রাখতে চায়, সে যেন আমার সাহাবিদের ভালোবাসে। যে সাহাবিদের সঙ্গে ভালোবাসা রাখতে চায়, সে যেন পবিত্র কুরআনকে ভালোবাসে। যে কুরআনের সঙ্গে ভালোবাসা রাখতে চায়, সে যেন মসজিদকে ভালোবাসে। কেননা মসজিদ আল্লাহর ঘর। আল্লাহ এর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আদেশ দিয়েছেন এবং এতে বরকত রেখেছেন। মসজিদ আল্লাহর হেফাজতে থাকে, তাই মসজিদের সঙ্গে সম্পর্কিতরাও আল্লাহর হেফাজতে থাকে। তারা নামাজে মনোযোগী হয়, আল্লাহ তাদের কার্যোদ্ধার করেন এবং অভাব দূর করেন। তারা মসজিদে থাকা অবস্থায় আল্লাহ তায়ালা তাদের জিনিসপত্র হেফাজত করেন।’ (তাফসিরে কুরতুবি : ১২/২৬৬)

মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় যে পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করবেন

>> মসজিদকে সব রকমের অপবিত্রতা ও দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু থেকে বিরত রাখা ঈমানের দাবি। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার সামনে আমার উম্মতের ভালো-খারাপ সব আমল পেশ করা হলো। ভালো আমলগুলোর মধ্যে আছে-রাস্তার মধ্যে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া। আর খারাপ আমলের মধ্যে আছে-মসজিদে থুতু, ময়লা-আবর্জনা থাকা সত্ত্বেও পরিষ্কার না করা।’ (বুখারি : ৪১৫; মুসলিম : ৫৫২)

>> মসজিদে পবিত্রতা রক্ষায় এর ভেতর ক্রয়-বিক্রয় করাও নিষেধ। আল্লাহর ঘরে এসে নিজের জাগতিক প্রয়োজন পূরণ করাটা বিবেকসম্পন্ন কাজ হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা এটা খুব অপছন্দ করেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) এ ধরনের লোককে কঠিন ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘মসজিদে কাউকে কেনাবেচা করতে দেখলে তোমরা বলবে, আল্লাহ তোমার ব্যবসা লাভজনক না করুক।’ (তিরমিজি : ১৩৩৬)

>> পবিত্র পোশাক দেহ ও মন নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তানেরা! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজ-সজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান করো, তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করে না।’ -(সূরা আরাফ: ৩১)

>> অজু করে মসজিদে প্রবেশ করা বিশেষত অজুর পানি যাতে মসজিদে না পড়ে খেয়াল রাখা। হজরত উসমান (রা.) বলেন, ‘আমি রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি অজু করবে আর তা উত্তমরূপে করবে এবং পায়ে হেঁটে ফরজ নামাজ লোকদের সঙ্গে অথবা জামাতের সঙ্গে অথবা মসজিদে আদায় করবে, তার গোনাহ ক্ষমা করা হবে।’ -(সুনানে নাসাঈ: ৮৫৬)

>> মসজিদে শোরগোল না করা, মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে না যাওয়া, আঙ্গুল না ফোটানো। হজরত হাসান বসরি (রহ.) হতে বর্ণিত, রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মানুষের জন্য এমন একটি সময় আসবে যখন মসজিদে পার্থিব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে, সুতরাং তোমরা তাদের সঙ্গে বসবে না, তাদের সঙ্গে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। -(শোয়াবুল ঈমান: ২৭০১)

>> মসজিদে তাড়াহুড়া না করে স্থির ও শান্ত হয়ে বসা। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা নামাজে আসবে অবশ্যই ধীরস্থিরতা বা শান্তভাব বজায় রাখবে। যেটুকু পাবে তা আদায় করবে আর যা পাবে না তা পূর্ণ করবে। -(সহিহ বোখারি: ৫৯৯)

এনটি