নবীজির রওজা জিয়ারতের সময় যেসব ভুল করবেন না
মসজিদে নববী জিয়ারতের সময় হজ ও ওমরা পালনকারীরা কিছু কিছু ভুল করে থাকেন। এই ভুলগুলো থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। এমন কিছু ভুল হলো-
>> ধর্মীয় বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় কেউ কেউ মনে করেন মসজিদে নববী জিয়ারত করা হজের অনুষঙ্গ। মসজিদে নববী জিয়ারত না করলে হজ আদায় হবে না। আবার কেউ কেউ মসজিদে নববী জিয়ারতকে হজের থেকেও বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
বিজ্ঞাপন
এমন ধারণ ঠিক নয়। কারণ, হজ ও মসজিদে নববী জিয়ারত - একটির সঙ্গে অপরটির কোনও সম্পর্ক নেই। মসজিদে নববী জিয়ারত ছাড়াও হজ আদায় হয়ে যাবে।
তবে মসজিদে নববীতে নামাজ আদায় ও আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জিয়ারতের আলাদা ফজিলত রয়েছে। তাই হজের সফরে গিয়ে নবীজির রওয়া জিয়ারত করা উত্তম।
এছাড়া অনেক দূর থেকে হজ করার জন্য হাজিরা সৌদি আরবে উপস্থিত হন। এতে অনেক অর্থ ব্যয় হয়, বারবার সৌদি আরবে সফর করাটা কষ্টসাধ্য। তাই হজের সফরেই মসজিদে নববীতে নামাজ আদায় ও নবীজির রওজা জিয়ারত করে থাকেন হজ ও ওমরাযাত্রীরা।
মনে রাখতে হবে, হজ ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি, অপরদিকে মসজিদে নববীতে জিয়ারতের বিষয়টি এমন নয়। তবে আমরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত, উম্মতের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা ছিলো। তিনি কেয়ামতের দিন তার উম্মতের জন্য সুপারিশ করবেন আল্লাহর কাছে। সেই ভালোবাসার দাবি হলো নবীজির রওজা জিয়ারত করা।
এক হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে আমার রওজা জিয়ারত করল, তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।’ (সহিহ মুসলিম)। তিনি আরও বলেন, যে হজ করল কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত করল না; সে আমার প্রতি জুলুম করল। (তিরমিজি) ফকিহগণের মতে, হাজির জন্য মদিনা শরিফ জিয়ারত করা সুন্নত। ।
>> অনেকে নবীজির রওজা জিয়ারতের সময় কবরের চারদিকে তাওয়াফ করেন এবং হুজরার গ্রিল ও দেয়ালগুলো স্পর্শ করেন। এমনকি কেউ কেউ তাদের ঠোঁট দিয়ে চুমো খান, দেয়ালের উপর নিজেদের গাল রাখেন– এগুলো সবই অনুচিত কাজ। কাবা ঘর ছাড়া অন্য কিছুর চারদিকে তাওয়াফ করা নিষিদ্ধ ও বিদয়াত।
>> কিছু কিছু জিয়ারতকারী মসজিদে নববীর মেহরাব, মিম্বর ও মসজিদের দেয়ালকে স্পর্শ করে। এসব অনুচিত কাজ।
>> অনেকে বিপদাপদ থেকে উদ্ধারের জন্য কিংবা নিজের মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ডাকেন। আলেমরা এই কাজটিকে অনুচিত বলেন এবং এটি শিরকের পর্যায়ভুক্ত। পবিত্র কোরআনে এমন কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর নিশ্চয় মসজিদগুলো (তথা সিজদার স্থানগুলো) আল্লাহর জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে ডেকো না।’ (সূরা জিন, আয়াত: ১৮)
(ইসলাম সুওয়াল ওয়া জাওয়াব, অনলাইন, ৩১৮২২ নম্বর ফাতাওয়া, দালিলুল আখতা আল্লাতি ইয়াকাউ ফিহাল হাজ্জ ওয়াল মুতামির, শাইখ উছাইমীন)
এনটি