কোরআনের যেসব আয়াতে হজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে
মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তায়ালা মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দেওয়ার আদেশ করেছিলেন। তার ঘোষণার পর থেকে প্রতি আল্লাহতে বিশ্বাসীরা হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় যান। হজকে কেন্দ্র করে পুরো বিশ্বের মুসলিমরা একত্রিত হন বায়তুল্লাহতে। প্রতি বছর ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে মিনা, আরাফা ও মুজদালিফা প্রাঙ্গণ।
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে দেওয়া হজের নির্দেশের আলোচনা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। এছাড়াও কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে হজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে। হজ সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতগুলো তুলে ধরা হলো এখানে-
বিজ্ঞাপন
>> বাইতুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার শক্তি ও সামর্থ্য যে রাখে, সে যেন হজ করে এবং যে এ নির্দেশ অমান্য করবে সে কুফুরির আচরণ করবে, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্ব প্রকৃতির ওপর অবস্থানকারীদের মুখাপেক্ষী নন। (সুরা আলে ইমরান,আয়াত:৯৭)
>> নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্যতম। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘরের হজ কিংবা ওমরা সম্পন্ন করবে, এ দুই পর্বতের মধ্যে দৌড়াবে তার পক্ষে কোনো পাপের কাজ সম্ভব নয়। আর যে ব্যক্তি নিজ ইচ্ছা, আগ্রহে ও উৎসাহে কোনো মঙ্গলজনক কাজ করবে, আল্লাহ তার সম্পর্কে অবহিত এবং এর পুরস্কার দান করবেন, তিনি সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা,আয়াত:১৫৮)
>> যখন আমি কাবাঘরকে মানব জাতির জন্য সম্মিলন ও নিরাপত্তা স্থল করেছিলাম এবং বলেছিলাম, তোমরা ইবরাহিমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাজেরর স্থান বানাও এবং ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, আমার ঘরকে তাওয়াকারী, অবস্থান ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখো। (সুরা বাকারা,আয়াত:১২৫)
>> তোমাদের ওপর তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে কোনো পাপ নেই। অতপর যখন তাওয়াফের জন্য ফিরে আসবে আরাফাত থেকে, তখন মাশআরে হারামের কাছে আল্লাহকে স্মরণ করো। আর তাঁকে স্মরণ করো তেমন করে, যেমন তোমাদের হিদায়াত করা হয়েছে। আর নিশ্চয়ই এর আগে তোমরা ছিলে অজ্ঞ। অতপর তাওয়াফের জন্য দ্রুত গতিতে সেখান থেকে ফিরে এসো, যেখান থেকে সবাই ফিরে আসে আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাকারী ও করুণাময়।(সুরা বাকারা,আয়াত:১৯৮-১৯৯)
>> তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যখন হজ ও ওমরার নিয়ত করবে, তখন তা পূর্ণ করবে, আর কোথাও যদি বাধা প্রাপ্ত হয়ে পড়, তাহলে কোরবানির যে বস্তু তা আল্লাহর উদেশ্যে পেশ করে দিও এবং নিজেদের মাথা মুন্ডন করো না যতক্ষণ না কোরবানির পশু নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে যায়। কিন্তু যে ব্যক্তি এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়বে কিংবা মাথায় যদি কোনো অসুখ থাকে, তাহলে তার পরিবর্তে রোজা রাখবে কিংবা ফিদিয়া দেবে অথবা কোরবানি করবে। আর তোমাদের মধ্যে যারা হজ ও ওমরা একত্রে একসঙ্গে পালন করতে চায়, তাহলে যা কিছু সহজলভ্য, তা দিয়ে কোরবানি করাই তার ওপর কর্তব্য।
বস্তুত যারা কোরবানির পশু পাবে না, তারা হজের দিনগুলোর মধ্যে তিনটি রোজা রাখবে আর সাতটি রোজা রাখবে ফিরে যাওয়ার পর এভাবে ১০টি রোজা পূর্ণ হয়ে যাবে। এ নির্দেশটি তাদের জন্য, যারা মসজিদুল হারামের পাশে বসবাস করে না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আর জেনে রাখো, আল্লাহর আজাব বড়ই কঠিন।(সুরা বাকারা,আয়াত:১৯৬)
>> আর লোকদের মধ্যে হজের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে সব দূরবর্তী স্থান থেকে হেঁটে ও উটের ওপর সওয়ার হয়ে আসবে। যাতে তারা তাদের কল্যাণ ও নির্দিষ্ট দিনগুলোয় আল্লাহর নাম স্মরণ করে তাঁর দেওয়া জীবিকা হিসেবে চতুষ্পদ জন্তু জবাই করতে পারে। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং অভাবগ্রস্থকে আহার করাও।(সুরা হজ, আয়াত:২৭-২৮)
>> যে ব্যক্তি হজের নির্দিষ্ট মাসসমূহে হজের নিয়ত করবে, তাকে এদিক দিয়ে সর্তক থাকতে হবে যে, হজকালীন তার দ্বারা যেন কোনো পাশবিক লালসা তৃপ্তির কাজ, কোনো জেনা-ব্যভিচার, কোনো রকমের লড়াই-ঝগড়ার কথাবার্তা যেন না হয়। আর তোমরা যা কিছু সৎকাজ কর, আল্লাহ তা জানেন। আর তোমরা উত্তম পাথেয় সঙ্গে নিয়ে নাও। নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। হে বুদ্ধিমান লোকেরা! তোমরা শুধু আমাকে ভয় কর। -(সুরা বাকারা,আয়াত:১৯৭)
এনটি