কোরবানির গোশত দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে খাওয়ানো যাবে?
কোরবানি এক মহৎ ইবাদত। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, বর্ণিত হয়েছে, ‘কোরবানির গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না বরং কোরবানির মধ্য দিয়ে তোমাদের তাকওয়া-পরহেজগারী বা আল্লাহভীতিই তাঁর কাছে পৌঁছে। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন—যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা কর। এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।’ (সুরা হজ, আয়াত, ৩৯)
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কোরবানি করা পশুর গোশত কোরবানিদাতা নিজে খেতে পারবে এবং অন্যকে দাওয়াত করেও খাওয়ানো যাবে। বিয়ে কিংবা যে কোনো বৈধ অনুষ্ঠানে এ গোশত দ্বারা খাবার পরিবেশন করাতেও কোনো বাঁধা নেই। তবে শুধু বিয়ে বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানের নিয়তে কোরবানি করলে তা বৈধ হবে না।
বিজ্ঞাপন
কারণ, এতে গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি হয়ে যাচ্ছে এবং আল্লাহর বিধান পূর্ণ করার জন্য এ কোরবানি করা হচ্ছে না, বরং আত্মীয়দের খাওয়ার জন্য পশু জবাই করা হচ্ছে। তাই শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানের নিয়তে কোরবানি করলে কোরবানি শুদ্ধ হবে না।
তবে যদি আল্লাহর হুকুম পালন করার উদ্দেশ্যে কোরবানি করে থাকে, আর এরপর কোরবানির গোশত দিয়ে বিয়ের মেহমানদারি করে,তাহলে কোরবানিও শুদ্ধ হবে আবার মেহমানদের খাওয়ানোও বৈধ হবে।
অর্থাৎ যদি কেউ বড় পশুর সাত ভাগ থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান বা ওলিমার জন্য কোনও অংশ আলাদা করে রাখে, তাহলে এভাবে অংশ রাখার কারণে কোরবানি নষ্ট হবে না। বরং কোরবানি শুদ্ধ হয়ে যাবে।
এখানে মাসআলা মূলত দু’টি। এক হল, কোরবানির অংশকে বিয়ের মেহমানদারীর জন্য কোরবানি করা। আর দ্বিতীয় মাসআলা হল, কোরবানির অংশ নয়, বরং কোরবানির পশুতে আলাদা অংশে বিয়ের অনুষ্ঠান বা ওলিমার অংশ রাখা।
প্রথম অবস্থায় কোরবানি আদায় হবে না, দ্বিতীয়টিতে কোরবানি আদাায় হয়ে যাবে।
(ফতোয়ায়ে হিন্দ, ৫/৩০২, তাতারখানিয়া, ১৭৪৫০, ২৭৭৯৩, দুররুল মুখতার, ২/৫১৭, ফতোয়ায়ে শামী : ৬/৩২৬-৩২৭, দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইটের ৬৬১৯০ নম্বর ফতোয়া ও জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া আল্লামা ইউসুফ বানুরি টাউন করাচির ওয়েবসাইটের ১৪৪১০৫২০০৩৪৯ নম্বর ফতোয়া)
এনটি