প্রতীকী ছবি

হজ আদায়কারীকে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ বলেছেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে হজ করল এবং এসময় অশ্লীল ও গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকল, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসবে।’ (বুখারি: ১৫২১)।

সামর্থ থাকার পরও হজ না করার পরিণাম ভয়াবহ। ফরজ হজ ত্যাগ করলে ইহুদি-নাসারার মতো মৃত্যু হবে বলে হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন-

من أطاق الحج فلم يحج فسواء عليه مات يهوديا أو نصرانيا

যে ব্যক্তি হজ করার সামর্থ্য রাখে, তবুও হজ করে না, সে ইহুদি হয়ে মৃত্যুবরণ করল কি খ্রিস্টান হয়ে, তার কোনো পরোয়া আল্লাহর নেই। (ইবনে কাসির: ১/৫৭৮)

আর কেউ যদি হজ অস্বীকার করে বা কোনো ধরনের অবহেলা প্রদর্শন করে তবে সে আল্লাহর জিম্মার বাইরে বলে বিবেচিত হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا، ومن كفر فان الله غنى عن العلمين

মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের ওপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ করা ফরজ। আর কেউ যদি অস্বীকার করে, তাহলে জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রতি মুখাপেক্ষী নন। (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)

হজ আদায়ের সময় কারও জিম্মাদারিতে ঋণ থাকলে তার বিধান নিয়ে আলেমরা বলেন, হজ আদায়ের সময় কারো জিম্মাদারিতে ঋণ থাকলে তার হজ আদায় হয়ে যাবে যদি হজের রোকন ও শর্তগুলো সে পরিপূর্ণভাবে আদায় করে। এই হজ দ্বিতীয়বার করার প্রয়োজন হবে না। তবে এভাবে হজ করাকে কোনো কোনো ফকিহ মাকরুহ বলেছেন। (ফাতাওয়া কাজিখান : ১/৩১৩) 

আলেমদের মতে, সম্পদের সাথে বা ঋণের সাথে হজের শুদ্ধতার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যে ব্যক্তির ঋণ আছে তার জন্য হজ না করা উত্তম। যে অর্থ সে হজ আদায়ে খরচ করবে সে অর্থ ঋণ আদায়ে খরচ করা উত্তম এবং শরয়ি বিবেচনায় সে সামর্থ্যবান নয়।

আর জিম্মাদারিতে ঋণ থাকলে ঋণ পরিশোধ করা জরুরি। কারণ, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করা নিষেধ। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ধনী ব্যক্তির (ঋণ আদায়ে) গড়িমসি করা জুলুম। (বুখারি, হাদিস : ২৪০০) তবে ঋণ পরিশোধ না করে হজ আদায় করলেও ফরজ হজ আদায় হয়ে যাবে। 

শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায, শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আফিফি, শাইখ আব্দুল্লাহ গাদইয়ান বলেছেন, হজ ফরজ হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে- ‘সামর্থ্যবান হওয়া। সামর্থ্যের মধ্যে রয়েছে- আর্থিক সামর্থ্য। আর যে ব্যক্তির উপর ঋণ রয়েছে, ঋণদাতারা যদি ঋণ আদায় করার আগে হজ আদায়ে বাধা দেয় তাহলে সে ব্যক্তি হজ আদায় করবে না। কারণ সে সামর্থ্যবান নয়। আর যদি তারা ঋণ আদায়ে চাপ না দেয় এবং সে জানে যে, তারা বিষয়টি সহজভাবে নিবে তাহলে তার জন্য হজ আদায় করা জায়েজ আছে। হতে পারে হজ তার ঋণ আদায় করার জন্য কোন কল্যাণের পথ খুলে দিবে।’ ( সৌদি স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র, ১১/৪২, ইসলাম সুওয়াল জাওয়াব, ২০৪৯৮৬)

এনটি