প্রতীকী ছবি

গোশত মানুষের প্রিয় খাবার। বিভিন্ন হালাল প্রাণীর গোশত খাওয়া মুসলিমদের জন্য বৈধ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে, মৃত জন্তু  গোশত, প্রবাহমান রক্ত, শুকুরের গোশত, আল্লাহ ভিন্ন অন্যের নামে জবাইকৃত প্রাণীর গোশত, শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, আঘাতে মৃত জন্তু, পড়ে গিয়ে মৃত জন্তু, অন্য পশুর শিংয়ের আঘাতে মৃত জন্তু, হিংস্র পশুর খাওয়া জন্তু, তবে এ রকম প্রাণীকে যদি তোমরা মরার আগে জবেহ করে থাক এবং হারাম করা হয়েছে ওই পশু, যা পূজার বস্তুর কাছে জবাহ করা হয়।’ (সূরা মায়েদা-৩)

ইসলাম বলে, যে সকল পশু-পাখির গোশত খাওয়া বৈধ, ওগুলোও যেন-তেনভাবে মেরে খাওয়া যাবে না। বরং এমনভাবে জবাই করে খেতে হবে, যেন নাপাক রক্ত পশুর শরীর থেকে বের হয়ে যায় এবং জন্তুরও কষ্ট কম হয়। তাই ইসলামের বিধান হচ্ছে, জবাই করার সময় মূল চারটা রগের কমপক্ষে তিনটা কাটতে হবে। এতে নাপাক রক্ত বেশি বের হবে এবং সহজে পশুর জান বের হয়ে যাবে। 

চিকিৎসা বিজ্ঞান স্বীকার করেছে, গোশত খেয়ে সুস্থ থাকার জন্য ইসলামী জবেহ পদ্ধতির বিকল্প কোনো পদ্ধতি হতে পারে না। যেকোনও পশু জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ বলা ওয়াজিব। ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ ছেড়ে দিলে সে পশু খাওয়া হারাম হয়ে যাবে। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَلَا تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ

যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গুনাহ। (সুরা আনআম-১২১)

তবে ভুলে বিসমিল্লাহ ছুটে গেলে জবাই সহীহ হয়ে যায়। ‘বিসমিল্লাহ’ ভুলে যাওয়ার কারণে জবাইকৃত পশু-পাখি হারাম হয়ে যায় না। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا

হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। (সূরা বাকারা ২৮৬)

হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

  إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ

নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মতের ভুল, বিস্মৃতি এবং বাধ্য হয়ে করা বিষয় ক্ষমা করেছেন। (ইবন মাজাহ ২০৪০) ভুলবশত বিসমিল্লাহ না পড়ে জবাই করা সম্পর্কে তাবিঈ ইবরাহীম নাখায়ী রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এতে কোনো সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৮৫৪০)

এনটি