জিকিরের সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম হলো জিকির বা আল্লাহকে স্মরণ করা। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর এবং সকাল সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ঘোষণা কর। এখানে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা বলতে জিকিরকে উদ্দেশ করা হয়েছে। (সূরা আহজাব : ৪১-৪২)
জিকিরের গুরুত্ব ও ফজিলত
বিজ্ঞাপন
পবিত্র কোরআনে দাঁড়িয়ে, বসে এমনকি শুয়ে সবসময় জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করার কথা বলা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টি বিষয়ে (তারা বলে) হে পরওয়ারদিগার! এসব নিয়ে অনর্থক সৃষ্টি করেননি। (সূরা আলে ইমরান : ১৯১)।
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, যারা ইমানদার তারা এমন লোক যে, যখন আল্লাহর জিকির করা হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে। আর যখন তাদের সামনে আল্লাহর আয়াত পাঠ করা হয় তখন তাদের ইমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় প্রভুর ওপর ভরসা করে। (সূরা আনফাল : ২)।
কখনো জিকির থেকে গাফেল বা অমনোযোগী হওয়া যাবে না। জিকির থেকে গাফেল হলে সৃষ্টির ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে নানা বিপদাপদ নাজিল হয়ে থাকে। যারা জিকির থেকে গাফেল হয় তাদের দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো। (বুখারি : ৬৪০৭, মুসলিম : ৭৭৯)।
জিকিরের সময় লক্ষণীয়
এজন্য আল্লাহর প্রিয় হতে চাইলে জিকির করতে হবে বেশি বেশি। তবে জিকির করার সময় এবং আগে এর আদব ও নিয়মের প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি। এতে করে জিকিরের মূল উদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব। জিকিরের সময় খেয়াল রাখা জরুরি এমন কিছু বিষয় হলো-
১. জিকির করার জন্য অজু করা জরুরি নয় তবে অজু করে জিকির করলে বেশি ফায়দা হয় এবং জিকিরের বেশি বেশি ফজিলত লাভ করা যায়।
২. কেবলামুখী হয়ে বসে জিকির করা উত্তম।
৩. একাগ্রতার সঙ্গে জিকির করতে হবে।
৪. এই বিশ্বাস রেখে জিকির করা উচিত যে, আল্লাহ তায়ালা আমার জিকির শুনছেন। তাই আল্লাহর ওপর পুরোপুরি ভরসা রেখে তার প্রতি ভালোবাসা রেখে জিকির করতে হবে।
৫. একনিষ্ঠ মনে জিকির করতে হবে।
৬. মহিলাদের কণ্ঠস্বরেরও পর্দা রয়েছে। তাই পরপুরুষ যেন নারীদের আওয়াজ শুনতে না পায়, সেভাবে জিকির করতে হবে।
৭. জিকিরের সময় মুখে উচ্চারিত শব্দগুলোর অর্থের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। এতে করে জিকিরের মূল উদ্দেশ্য অর্জন করা সম্ভব।
৮. সম্ভব হলে বাবা, স্বামী বা কোনও মাহরাম পুরুষের মাধ্যমে বুজুর্গ ও অভিজ্ঞ আলেমদের থেকে জিকিরের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা নিয়ে সেই অনুযায়ী জিকির করা যেতে পারে।
এনটি