হজ-ওমরা ছাড়া মক্কায় প্রবেশের জন্য কি ইহরাম বাঁধতে হবে?
হজ-ওমরা পালনকারীদের মক্কার উদ্দেশে বের হওয়ার সময় মিকাত (নির্ধারিত স্থান) অতিক্রম করার আগে ইহরামের কাপড় পরে নিতে হয়। ইহরাম না পরে মিকাত অতিক্রম করা জায়েজ নয়।
তবে কেউ যদি হজ বা ওমরার নিয়ত ছাড়া অন্য কোনও কাজে বা প্রয়োজনে মক্কায় প্রবেশ করতে চায় তাহলে তার জন্য ইহরাম বাঁধা জরুরি কিনা অনেকে জানতে চান।
বিজ্ঞাপন
যেমন একজন প্রশ্ন করেছেন- ‘কিছুদিন আগে আমার এক চাচাত ভাই শ্রমিক ভিসায় সৌদীআরব গিয়েছেন। কাজ কোথায় হবে তা আগে থেকে জানা ছিল না। জেদ্দায় পৌছার পর ভিসাদাতা কোম্পানি মক্কার একটি রডের দোকানে তাকে নিয়োগ দেয়। মক্কায় পৌঁছলে জানতে পারেন যে, ইহরাম ছাড়া মক্কায় প্রবেশ করা অন্যায়। তাই তাকে জরিমানা স্বরূপ দম দিতে হবে।
তিনি গ্রামের সাধারণ মানুষ, মাসআলা মাসায়েল সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তিনি এ ব্যাপারে ভীষণ অস্থিরতার মধ্যে আছেন।
জানার বিষয় হল, এ পরিস্থিতিতে তার এখন করণীয় কী’?
এর উত্তরে আলেমরা বলেন, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ভাই যেহেতু জেদ্দার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেছে, তখন তার মক্কায় প্রবেশের ইচ্ছা ছিল না তাই সেক্ষেত্রে তার জন্য মীকাত অতিক্রম করার সময় ইহরাম করা জরুরি ছিল না। এবং পরবর্তীতে জেদ্দা থেকে মক্কায় ইহরাম ছাড়া প্রবেশ করাও অন্যায় হয়নি। সুতরাং উক্ত কারণে তাকে কোনো দম দিতে হবে না। এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই। তবে যদি কখনো আপনার ভাই ওমরা করতে চায় তবে জেদ্দা বা হেরেমের বাইরে যে কোনো স্থান থেকে ইহরাম করে ওমরা আদায় করতে হবে।
আলেমরা বলেন, যারা হজ বা ওমরার জন্য মক্কায় যাবে শুধু তাদের জন্য ইহরাম বাঁধা আবশ্যক। মক্কায় কারও কর্মস্থল বা ব্যবসাস্থল হলে, অথবা কেউ শুধু তাওয়াফ করতে মসজিদুল হারামে গেলে বা আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাকে ইহরাম বাঁধতে হবে না।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হজ ও ওমরার নিয়তকারী সেই অঞ্চলের অধিবাসী এবং ওই সীমারেখা দিয়ে অতিক্রমকারী অন্যান্য অঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য উক্ত স্থানগুলো মীকাতরূপে গণ্য (বুখারী, হাদিস,১৫২৪; নাসাঈ, হাদিস, ২৬৫৪।)
-(আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৬৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৭৬; আননাহুরুল ফায়েক ২/১৫২; মানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী পৃ. ৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/৪৭৭)