প্রতীকী ছবি

সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে মানবজাতির প্রতি আল্লাহ তায়ালা অগণিত নিয়ামত দান করেছেন। এসব নিয়ামত গণনা করে শেষ করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি আল্লাহর নিয়ামত গণনা কর, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ -(সূরা আন নাহল: ১৮)

নিয়ামতের কথা চিন্তা করলে প্রত্যেক ব্যক্তি প্রথমে নিজের দেহের কথাই ভাবতে পারে। দেহের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, শিরা-উপশিরায় নিয়ামত আর নিয়ামত। মানুষের শরীরে আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত অন্যতম নেয়ামত হলো চোখ। দৃষ্টি শক্তি না থাকলে অন্য কোনও নেয়ামতই উপভোগ করা সম্ভব নয়। তাই চোখের যত্ন নেওয়া আব্যশ্যক। আল্লাহর রাসুল অন্যসব বিষয়ের মতো চোখের যত্ন নেওয়ার প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। 

তিনি চোখের যত্নে সুরমা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। রাসুল (সা.) প্রতি রাতে উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা ব্যবহার করতেন। 

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘নবীজির একটি সুরমাদানি ছিল। তিনি প্রতি রাতে ঘুমে যাওয়ার পূর্বে ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা ব্যবহার করতেন।’

তিনি আরও বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ইসমিদ সুরমা ব্যবহার কর। কারণ তা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে, চোখ পরিষ্কার রাখে এবং অধিক চোখের পাপড়ি জন্মাতে সাহায্য করে।’ (বায়হাকি : ৮৫১৬; ইবনে মাজা : ৩৪৯৬)

সুরমা লাগানোর তিনটি পদ্ধতির কথা হাদিস বিশারদগণ বর্ণনা করেছেন।

১. প্রত্যেক চোখে আলাদাভাবে তিনবার করে সুরমা লাগানো। প্রথমে ডান চোখে তিনবার। এরপর বাম চোখে তিনবার।

২. দুই চোখে একসঙ্গে সুরমা দেওয়া। গড়ে তিনবার হওয়া। প্রথমে ডান চোখের ডান দিক থেকে একবার। এরপর বাম চোখের ডান দিক হতে একবার। এভাবে পর্যায়ক্রমে তিনবারে শেষ করা।

৩. নবীজি কখনও ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে দুবার লাগাতেন। তাই চাইলে এ পদ্ধতিতেও সুরমা লাগানো যায়।

তবে পুরুষের জন্য শুধু সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে সুরমা ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ, এ ধরনের অঙ্গসৌন্দর্য নারীদের বিশেষত্ব। পুরুষরা শুধু উপকার লাভের নিয়তে সুরমা ব্যবহার করতে পারবেন। (ফাতাওয়া শামি : ২/৪১৭; ফাতাওয়া আলমগিরি : ৫/৩৫৯; আল-বাহরুর রায়েক : ২/২৮০)