কেউ বিপদে পড়লে যে দোয়া পড়বেন
যেকোনও মুহুর্তে যেকেউ বিপদে পড়তে পারেন, হঠাৎ করেই বদলে যেতে পারে স্বাভাবিক জীবনের নিয়ম-রুটিন। বিপদাপদে ভেঙ্গে পড়তে নেই, সব কঠিন মুর্হুতের পর আল্লাহ তায়ালা সুখের মুখ দেখান। ক্লান্তির পর স্বস্তির দেখা মিলে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের এই শান্ত্বনাই দিয়েছেন। বর্ণিত হয়েছে, ‘সুতরাং কষ্টের সাথেই তো স্বস্তি আছে, নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে।’ ( সুরা আল-ইনশিরাহ, আয়াত, ৫-৬)
বিজ্ঞাপন
বিপদে-আপদে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক মুমিনকে ধৈর্যধারণের উপদেশ দিয়েছেন। বর্ণিত হয়েছে, হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সুরা বাকারাহ, আয়াত, ১৫৩)
বিপদে, দুঃখে ধৈর্যধারণকারী মুমিনের জন্য বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি বলেছেন, মুমিনের বিষয়াদি কত আশ্চর্যের! তার সবকিছুই কল্যাণকর। আর এটা তো কেবল মুমিনের ক্ষেত্রেই হতে পারে। সচ্ছলতায় সে শুকরিয়া আদায় করে, তখন তা তার জন্যে কল্যাণকর হয়। আর যদি তার ওপর কোনো বিপদ নেমে আসে তাহলে সে সবর করে, ফলে তাও তার জন্যে কল্যাণকর হয়ে যায়। -(সহীহ মুসলিম, হাদীস, ২৯৯৯)
ইসলাম তার অনুসারীদের নিজের বিপদাপদে ধৈর্যধারণের কারণে পুরস্কারের পাশাপাশি অন্যের বিপদে পরোপোকারী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে, আল্লাহ তাআলাও তার কল্যাণে রত থাকবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৪৬)
আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার ওপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মেটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মেটাবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৯৩)
অন্যের বিপদ-সঙ্কটে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দোয়াও করতে বলেছেন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এমন একটি দোয়া হলো,
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِىْ عَافَانِىْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ – وَ فَضَّلَنِىْ عَلَى كَثِيْرٍ مِّمَنْ خَلَقَ تَفْضِيْلَا
উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আফানি মিম্মাবতালাকা বিহি; ওয়া ফাদ্দালানি আলা কাছিরিম মিম্মান খালাকা তাফদিলা।’
অর্থ : সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে বিপদাক্রান্ত করেছেন; তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং আমাকে তিনি তার মাখলুক থেকে মাখলুকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।’ তখন তাকে এ মুসিবত কখনো স্পর্শ করবে না।’ (তিরমিজি. মেশকাত, মকবুল দোয়া : ১৪৯)