শাবান মাসে নফল রোজা বেশি রাখবেন কেন?
মহিমান্বিত শাবান মাস মাহে রমজানের আগমনি বার্তা নিয়ে আসে। রমজান মাসের আগাম প্রস্তুতির তাগিদও দেয়। স্বভাবতই বিভিন্ন কারণে শাবান মাস ইসলামের দৃষ্টিতে বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ।
নবীজির রমজান-অপেক্ষা
শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতেন মহানবী (সা.)। তিনি রজব ও শাবানজুড়ে রমজানের অধীর অপেক্ষায় থাকতেন। রজব মাস শুরু হলে তিনি দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাজান।’ (শুআবুল ইমান : ৩৫৩৪)
বিজ্ঞাপন
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দিন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন (রমজান পর্যন্ত আমাদের আয়ু বৃদ্ধি করে দিন, যাতে আমরা রমজানে যথাযথ আমল করতে পারি)
শাবান মাসে অধিক রোজা
রমজানের আগমনের জন্য মহানবী (সা.) দিনক্ষণ গণনা করতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের (দিন-তারিখের হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ রাখতেন, যা অন্য মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩২৫)
মহানবী (সা.) শাবান মাসে অধিক হারে নফল রোজা রাখতেন। উম্মে সালমা (রা.) বলেন—
আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি।
(আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৩৬)
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি নবী করিম (সা.)-কে শাবান মাসের মতো এত অধিক (নফল) রোজা আর অন্য কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। এ মাসের সামান্য কয়েক দিন ছাড়া সারা মাসই তিনি রোজা রাখতেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৩৭)
যে কারণে শাবানে এতো রোজা
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, রমজানের পর কোন মাসের রোজা সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ? উত্তরে তিনি বলেন, শাবানের রোজা রমজানের সম্মানার্থে। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৬৩)
এ ছাড়া শাবান মাসে রয়েছে ফজিলতপূর্ণ একটি রাত। কোরআনের ভাষায় এটিকে ‘লাইলাতুম মুবারক’ আর আমাদের এ অঞ্চলের পরিভাষায় ‘শবেবরাত’ বলা হয়। বিভিন্ন হাদিসে এ রাতের ফজিলতের বিস্তারিত আলোচনা এসেছে।
মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫)
একজন মুসলমানের রমজান পালনের পূর্ণাঙ্গ একটি গাইডলাইন ‘যেভাবে কাটাবেন রমজান’। রমজানবিষয়ক প্রস্তুতির জন্য এবং সর্বোত্তমভাবে রমজান পালনে এই বইটি পাঠকের জন্য বেশ উপকারী। বইটি রচনা করেছেন আলেম ও সাংবাদিক মুফতি কাসেম শরীফ।