প্রতিবেশী বা পাশের মানুষটিকে সহজে আকর্ষণ করার সাবলিল যে ভাষা তাই মুচকি হাসি। অনেক সময় হাজারটা কথা খরচের থেকেও শক্তিশালী হয়ে দাঁড়ায় একটা মুচকি হাসি। ইসলাম মানুষকে যেসব উত্তম গুণ অর্জন করতে বলে তার একটি এই মুচকি হাসি। মুচকি হেসে কথা বলা সুন্নতেরও অংশ। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো মানুষের সঙ্গে রূঢ় ভাষায় কথা বলতেন না।

যেসব স্বভাব-বৈশিষ্ট্য তাকে অন্যদের কাছে অতুলনীয় করে তুলেছিলো তার একটি এই মুচকি হাসি। সবসময় আল্লাহর রাসুলের মুখে মুচকি হাসি যেন দ্যুতি ছাড়াতো।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারিস ইবনে জাযয়ি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বেশি মুচকি হাসতে আর কাউকে দেখিনি। (তিরমিজি-৩৬৪১) 

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়াও অন্য সব নবী রাসুলগণ মুচকি হেসে কথা বলতেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘তার কথা শুনে সোলায়মান মুচকি হাসল এবং বলল, হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন, যাতে আমি আপনার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, যা আপনি আমাকে ও আমার মাতা-পিতাকে দান করেছেন এবং যাতে আমি আপনার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (সুরা : নামল, আয়াত : ১৯)

হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎকাজ হতে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরূপ।

পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টি সম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথ হতে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। -(তিরমিজি ১৯৫৬) 

এক কথায় সব কল্যাণ আর সুন্দরের বার্তা লুকিয়ে রয়েছে এই মুচকি হাসিতে। তাই সবার উচিত যথাসম্ভব মুচকি হেসে কথা বলা।