প্রতীকী ছবি

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির সেরা জীবের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। মূলত নারী-পুরুষের বাইরে আল্লাহর সৃষ্টি আরেকটি লিঙ্গ বৈচিত্রের মানবধারা এই তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন মাজিদে বলেন, তিনি আল্লাহ মাতৃগর্ভে তোমাদেরকে যেমন ইচ্ছা তেমন রূপ দেন...(আল ইমরান-৬)।

তাই তাদের অবহেলা করার কোনও সুযোগ নেই ইসলামে। বাংলাদেশের সমাজে তাদের হিজড়া বলার প্রচলন রয়েছে।

বাংলা একাডেমীর সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান বলছে, ‘হিজড়া’ শব্দটি হিন্দি ভাষা থেকে এসেছে। হিজড়া বিষয়ক একজন গবেষক বলেন, হিজড়া শব্দটি এসেছে ফার্সি থেকে। ফার্সি ভাষায় হিজড়া অর্থ হল ‘সম্মানিত ব্যক্তি’।

সৃষ্টিগতভাবে সব মানুষই নিখুঁত নয়।কারো হাত নেই ,কারো পা নেই, কেউ চোখে কম দেখে, কেউ কানে কম শোনে, কেউ কথা বলতে পারেনা ,কারো বুদ্ধি কম, তবু এরা সবাই এক আল্লাহর সৃষ্টি।

ইসলাম হিজড়াদেরকে গুরুত্বহীন মনে করেনা বিধায় ইসলামী শরীয়ত মিরাছ তথা সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে তাদের জন্য পরিস্কার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

ইসলামি শরীয়া অনুযায়ী হিজড়া সন্তান তারা মা- বাবার সম্পত্তির ভাগ পাবে। এবং উত্তরাধিকার সম্পদে তারা নারী হিসেবে পাবে নাকি পুরুষ হিসেবে পাবে সেটা ইসলামী শরীয়াত নিশ্চিত করেছে।যে হিজড়া নারী বা পুরুষ প্রকৃতির সে নারী বা পুরুষের মানদণ্ডে উত্তরাধিকার সম্পদ পাবে।আর যে নারী নাকি পুরুষ এর কোনটিই চিহ্নিত করা যায়না সে তার প্রসাবের পথের অবস্থা অনুযায়ী ভাগ পাবে। (সূত্র সুনানে বায়হাকী, হাদিস নং ১২৯৪)।

ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরাও মুকাল্লাফ বা আল্লাহর বিধান পরিপালনে আদিষ্ট। সাধারণ মানুষের মতো তাদেরও নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত আদায় করতে হবে। এ জন্য পরকালে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। যার ভেতর নারীর স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য প্রবল সে নারী হিসেবে এবং যার ভেতর পুরুষের স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য প্রবল, সে পুরুষ হিসেবে ইসলামের বিধান মান্য করবে। আর যার মধ্যে কোনো বৈশিষ্ট্যই প্রবল নয়, সে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নারী বা পুরুষ হিসেবে ইসলামের বিধান মান্য করবে। (বিস্তারিত দেখুন : ইসলামকিউএডটইনফো, ফাতাওয়া : ২২১৯১৯ ও ২১৮১০৮)

ইসলামি স্কলাররা মত দিয়েছেন, হিজড়াদের অবহেলা করা যাবে না। তাদের গালি দেওয়া যাবে না। তাদেরকে নিয়ে উপহাস করা যাবে না। তারা সম্পত্তির উত্তরাধিকার লাভ করবে। তাদের ওপর ইসলামের বিধান কার্যকর হবে। যার মধ্যে মেয়েলি ভাব বেশি তার ওপর নারীদের বিধান এবং যার মধ্যে পুরুষের স্বভাব বেশি বিদ্যমান, তার ওপর পুরুষদের বিধান কার্যকর হবে।

এনটি