ভাষা মানুষের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। নিজ দেশ ও মায়ের ভাষা সবার কাছে প্রিয়। পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি বৈচিত্রের অন্যতম হলো মানুষের ভাষার ভিন্নতা। পৃথিবীজুড়ে মানুষের ভাষার এই ভিন্নতা আল্লাহ তায়ালার দান। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে। (সুরা-৩০ রুম, আয়াত: ২২, ২১, পারা: ২১, পৃষ্ঠা: ৫-৪০৭)

ইসলামে ভাষা চর্চার বিষয়টি অন্য সবকিছুর মতো অনেক গুরুত্বের। ভাষা চর্চার বিভিন্ন দিক নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন ইসলামী আলোচক ও সাহিত্যিক মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ। আলোচনায় উঠে এসেছে ইসলামী অঙ্গনের মানুষের ভাষা চর্চার আদ্যোপান্ত।


ঢাকা পোস্ট :  ইসলামে মাতৃভাষা ও বিশুদ্ধ ভাষা চর্চার গুরুত্ব-প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে চাই

শরীফ মুহাম্মদ :  ইসলামে মাতৃভাষা, জনসমাজের ভাষা ও নিজের ভাষায় কথা বলা, লেখা, মনের ভাব প্রকাশের যোগ্যতা অর্জন করার গুরুত্ব অনেক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর আমি প্রত্যেক রাসূলকে তার স্বজাতির ভাষাভাষী, করে পাঠিয়েছি, তাদের কাছে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য... (সুরা ইবরাহিম আয়াত, ৪)

রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোটা জীবন, বিভিন্ন আচরণ, কথা ও কাজ এবং সাহাবিদেরকে দেওয়া শিক্ষা থেকে বোঝা যায় বিশুদ্ধ ভাষা চর্চার প্রতি তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বলেছেন, ‘আমি বিশুদ্ধভাষী আরবদের একজন’। এখান থেকেই বোঝা যায়, মানুষের কাছে ইসলামের মৌলিক বার্তা ও উত্তম বিষয়গুলো পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ ভাষায় দক্ষতা অর্জন ও ভাষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্যতা অর্জনের গুরুত্ব রয়েছে ইসলামে। এবং এক্ষেত্রে কাঙ্খিত মাত্রার শুদ্ধতা যেন মানুষের মাঝে থাকে -এ বিষয়ের প্রতি যথাযথ গুরুত্বও দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা পোস্ট : 'মাতৃভাষা চর্চায় বাংলাদেশে ইসলামপন্থীরা পিছিয়ে' এমন একটা অভিযোগ আছে, অভিযোগের বাস্তবতা সম্পর্কে জানতে চাই

শরীফ মুহাম্মদ : ইসলামপন্থী একটা ব্যাপক শব্দ। এক সময় বলা হতো, আলেমরা ভাষা চর্চায় পিছিয়ে। এই কথাগুলো বলার একটা সময় ও প্রেক্ষাপট ছিল,  প্রায় চার, পাঁচ দশক আগে এসব উচ্চারণ হতো। 

এই অঞ্চল থেকে ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার শেষ দিকে কলকাতা কেন্দ্রিক যে একটা ভাষা সাহিত্যের উত্থান হয়েছে, এখানে মুসলমান বা ইসলামপন্থীরা ভাষা নিয়ে কাজ করার, বইপত্র লিখে ব্যাপকভাবে সামনে অগ্রসর হওয়ার সুযোগটা কম পেয়েছে। 

রবীন্দ্রনাথ, তার আগের-পরের যুগ এবং তার সমসাময়িক সময়টাতে যারা বাংলা ভাষায় কলকাতা কেন্দ্রিক চর্চা করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছেন তারা একটা অনুকূল জীবনযাপন করেছেন। তবে মুসলমানদের অবস্থা কিছুটা ভিন্ন ছিল। তখন আধুনিক, জাগতিক শিক্ষাতেও তারা কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন। ব্রিটিশদের কারণে এমন একটা বঞ্চনার প্রেক্ষাপট ছিল। তবে বর্তমানে এ-কথাটা আর ততটা প্রাসঙ্গিক নয়।

আলহামদুলিল্লাহ, গত ২০/৩০ বছরে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী বা আলেমরা মনেরভাব প্রকাশ, ইসলাম ও মানবিক জীবনকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপনে মাতৃভাষায় অনেক কাজ করেছেন, করছেন। তবে এই কাজের বিস্তার, পরিধি, মান-এসব নিয়ে হয়তো আরও কথা হতে পারে, কিন্তু তারা পিছিয়ে আছেন বা অগ্রসর হতে পারছেন না এই কথাটা এখন আর প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয় না। 

বরং আমি এভাবে বলবো, যারা ইসলামপন্থী বা আলেম নন, তারা সবাই কি বাংলা ভাষায় খুব অগ্রসর? তাদের মাঝে যারা উচ্চ শিক্ষিত আছেন, তাদের পাঁচ বা ১০ ভাগ মানুষ এমন পাওয়া যেতে পারে যাদের লেখা ও বলার ভাষা সুন্দর। তবে পাঁচ ভাগ হলেও তাদের যেহেতু মোট সংখ্যাটা বেশি তাই তুলনাটা অন্যভাবে নিয়ে আসা হয়।

গভীর ও সামগ্রিকভাবে বলা যায়, সমাজে যারা ইসলামপন্থী বা আলেম বলে পরিচিত নন, তাদের কতভাগ মানুষ ভালো বাংলায় বলতে, লিখতে পারেন আর বাংলাদেশের আলেমদের কতভাগ পারেন, এমনভাবে তুলনা করলে আমার ধারণা, এখন আলেম ও ইসলামপন্থীরা বাংলাদেশে একটা ভালো জায়গা ও অবস্থানে রয়েছে।

ঢাকা পোস্ট : ইসলামী অঙ্গনের মানুষজন বর্তমানে ভাষা- সাহিত্য চর্চা করছেন, এক্ষেত্রে তারা মূলধারার সাহিত্য বা সাহিত্যের মান বজায় রাখতে পারছেন কতটা?

শরীফ মুহাম্মদ : এটা একটা আপেক্ষিক প্রশ্ন। মূলধারা কাকে বলবো আর ইসলামী সাহিত্যের অঙ্গনে যারা আছেন তাদের আমি শুরুতেই মূলধারার বাইরে বলবো কিনা।

৮০'র দশক থেকে বাংলা একাডেমি, বাংলাবাজার এবং ঢাকা কেন্দ্রিক বিভিন্ন অভিজাত প্রকাশনী থেকে যাদের বই প্রকাশ হয়, তাদেরকে মূলধারা হিসেবে ধরা হচ্ছে। এখন ইসলামীধারায় যারা সাহিত্য চর্চা করছেন তাদেরকে এদের সাথে তুলনা করতে হলে আগে মূলধারা হিসেবে যারা পরিচিত তাদের মধ্যে একটা তুলনা করতে হবে।

মূলধারা বলে পরিচিতদের মাঝেও তো এমন অনেকে আছেন যাদের সাহিত্য তাদের নিজেদের কাছেই মাণোত্তীর্ণ নয়। একুশে বইমেলা, বিভিন্ন ঈদ সাময়িকী, সাহিত্যসাময়িকী ও সংবাদপত্রের সাহিত্য পাতাগুলো দেখলেই বোঝা যাবে তাদের মধ্যে মাত্র ১০/১৫ ভাগের লেখা সাহিত্য মান উত্তীর্ণ। বাকিদের লেখা তেমন সুবিধাজনক নয়, উত্তীর্ণ নয়। তবে ইসলামপন্থীদের মাঝে তুলনামূলক একটা ভালো অবস্থা রয়েছে। এ অঙ্গনে যারা লেখালেখি করেন তাদের অনেকের ভাষার মান ভালো।

আজ থেকে ৩০/৪০ বছর আগে তাদের বানানে ভুল থাকতো, সম্পাদনা, প্রোডাকশন, প্রকাশনার জায়গাগুলোতে কিছু দুর্বলতা ছিল, এখন হয়তো আর্থিক দিক থেকে কিছু দুর্বলতা থাকতে পারে, তবে অন্য জায়গাগুলো যথেষ্ট উন্নত হচ্ছে, এক্ষেত্রে মান ভালো করার জন্য লোকও তৈরি হচ্ছে। এখন অনেক তরুণ আলেম লেখালেখি-সম্পদনাকে পেশা হিসেবে নিয়ে কাজ করছেন। বইগুলো সুন্দরভাবে বের করার বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছেন। 

মূলধারার সাহিত্য বা সাহিত্য মানের সঙ্গে তুলনা করলে তাদের সাহিত্যের মান এখন খুব একটা দুর্বল না এবং তুলনা করে অন্য অঙ্গনকে ব্যাপকভাবে অগ্রসর ও ইসলামী অঙ্গনটাকে অনগ্রসর বলার অবস্থা, মনে হয়, এখন আর নেই।

তবে মানুষের একটা স্বভাবজাত প্রবণতা হলো, মানুষ জাগতিক জীবনের চাকচিক্য, নারী-পুরুষ, প্রণয়, গল্প, এসব নিয়ে কথাসাহিত্য; এই প্রসঙ্গগুলোকে পছন্দ করে। আধুনিকতা, জীবন-জগত ও অস্থায়ী জীবনের মোহময়তার প্রতি মানুষের যে মুগ্ধতা এবং এখান থেকে যে একটা বাজার তৈরি হয়, এটা শুধু সাহিত্যে নয়, বরং, ফিল্ম, জীবনযাত্রা, সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও তৈরি হয়, এর ছাপ বাজারে পড়তে পারে, এ কারণে অনেক সময় মনে হতে পারে, ইসলামপন্থীদের বই তো কম চলে, তাদের জগতও সংকুচিত। কিন্তু ইসলামের যে পরিশীলিত জীবনযাত্রার আহ্বান, মানুষ এ আহবানের দিকে আগ্রহী হয়ে ‍উঠলেই এর মজাটা বুঝতে পারবে। তখন বাহ্যিক চিত্রটিও আরো অন্যরকম হবে।

এক সময় যারা ইসলামী সাহিত্য দেখতেই চাইতেন না, তাদেরকেও এখন অনেক ইসলামপন্থীর সাহিত্য স্পর্শ করছে, তারাও ইসলামপন্থীদের বই পড়ছে। এতে বোঝা যায় ইসলামপন্থীদের সাহিত্য চর্চা অনেকটা আশাব্যঞ্জক অবস্থানে আছে এবং যাচ্ছে।

এটা সামনের দিকে আরও অগ্রসর হলে আমি আশা করি, বাংলা সাহিত্যে ইসলাম এবং জীবনে ইসলামের সৌন্দর্য এদেশের মানুষকে গভীরভাবে স্পর্শ করবে এবং সমাজে প্রভাব রাখবে।

ঢাকা পোস্ট :  ইসলামী অঙ্গনের তরুণদের অনেকেই অনুবাদ নির্ভর সাহিত্য চর্চায় এগোচ্ছেন- অনেকে এটাকে সৃজনশীল সাহিত্য চর্চার প্রতিবন্ধক মনে করেন, এ নিয়ে মোটামুটি বিতর্কও আছে, আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই

শরীফ মুহাম্মদ : ‘অনুবাদ নির্ভর সাহিত্য’ এটা একটা শব্দ, তবে আমি কথাটা এভাবে না বলে একে, ‘সাহিত্যে অনুবাদ’ বলে উল্লেখ করতে চাই।

সৃজনশীলতার সঙ্গে অনুবাদের দ্বন্দ্ব আছে এ কথা যেমন সত্য, আবার একে অন্যভাবেও দেখার সুযোগ আছে। একজন অনুবাদক যদি সফল, সার্থক অনুবাদক হন তাহলে এখানেও সৃজনশীলতার অনেক ব্যাপার আছে।  অনুবাদ করলেই কেউ সৃজনশীলতার বাইরে চলে গেল এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি একমত নই। অনেকের অনুবাদ নিজের তৈরী গদ্যের চেয়েও সুন্দর হতে পারে। লেখক বা অনুবাদকের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা, তার মনোযোগের ওপর নির্ভর করে।

দ্বিতীয় কথা হলো, বাংলাদেশের ইসলামপন্থী কিংবা তরুণ আলেমদের অনুবাদ ও মৌলিক সবগুলো বিষয় নিয়েই লেখালেখি করা জরুরি। কারণ এখানে বিষয়টা ইসলাম; জগত-জীবনের বাহ্যিক চাকচিক্য, প্রেম-ভালোবাসার গল্প ইত্যাদি হলে এসব নিয়ে অনেক ধরনের বই লেখা যেতো, কিন্তু বিষয় ইসলাম হওয়ার কারণে এর সঙ্গে উৎসের যোগাযোগ থাকতে হবে, ব্যাপক পড়াশোনা, গবেষণারও প্রয়োজন আছে। এসব অর্জন ছাড়া মৌলিক লেখালেখি চলতে থাকলে অনেক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তাই কোনও তরুণ আলেমের ব্যাপক, পড়াশোনা, গবেষণা না থাকলে তার লেখালেখি শুরুর সুন্দর একটি সুযোগ হচ্ছে, আরবি, উর্দু, ইংলিশ ও বিভিন্ন ভাষায় ইসলাম সম্পর্কিত বিষয়গুলো থেকে অনুবাদ করা। এর মাধ্যমে যেমন বাংলা ভাষা, ইসলামী বিষয়াদি দিয়ে সমৃদ্ধ হবে, পাশাপাশি অন্য দেশের মানুষের ইসলামের বিভিন্ন সৌন্দর্যকে দেখার আঙ্গিকগুলো বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফুটে উঠবে, মানুষ ইসলাম নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির অনেক কিছু জানতে পারবে।

এখানে অনুবাদের ভালো-মন্দ, সঠিক, বেঠিক নিয়ে তর্ক থাকতে পারে, সেটা ভিন্ন বিষয় এবং এরও সমাধান ও উত্তরণ দরকার। তবে আমি মনে করি অনুবাদ ও মৌলিক মিলিয়েই সাহিত্য সমৃদ্ধ হওয়ার একটা সময় যাচ্ছে এবং বিষয়টিকে এভাবে অগ্রসর হতে দেওয়াকে আমি ভালো মনে করি।

ঢাকা পোস্ট : একুশে বইমেলায় এখন কওমি তরুণদের অনেকেরই বই প্রকাশ হচ্ছে, সাম্প্রতিককালে এটা বেড়েছে- বিষয়টা কতটা, আনন্দ-উচ্ছ্বাস বা উপভোগের? 

শরীফ মুহাম্মদ : নিঃসন্দেহে এটা আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও উপভোগের, এবং এর সাথে সাথে আরেকটু মনোযোগেরও।

তরুণরা বই প্রকাশের মাধ্যমে প্রাথমিক যে আনন্দটা পান, এর সঙ্গে যেন পরিচর্যাটাও থাকে। তাদের ভাবতে হবে, সাহিত্যের এই পথটা অগ্রসরতার, এক জায়গায় আবদ্ধ থাকার জগত নয়। একজন তরুণ লেখক আজকে যতটুকু লিখতে, ভাবতে ও উপস্থাপন করতে পারেন, এই শ্রম এবং মনোযোগ বজায় রাখতে পারলে সামনের দিনগুলোতে তিনি আরও ভালো কাজ করতে পারবেন।

তাই উচ্ছ্বাসটা যেন তাৎক্ষণিকতায় আবদ্ধ হয়ে না যায়। একটা বই প্রকাশের আনন্দ যদি কাউকে দুবছর আচ্ছন্ন করে রাখে তাহলে সামনে ১০ বছর তার কাজের সম্ভাবনা কমে যাবে। তবে আনন্দটাকে যদি সামনের কাজের অনুপ্রেরণা হিসেবে নেয় তাহলে উচ্ছ্বাসটা তরুণদের এগিয়ে নিতে পারবে।

আজ থেকে অর্ধ শতাব্দীকাল আগে ইসলামপন্থীদের কোনও বই সহজে বের হতো না, এখন সেই দৃশ্যটা পাল্টেছে। তাই এই আনন্দ-উচ্ছ্বাসটাকে অনুপ্রেরণার প্রথম মনজিল হিসেবে উল্লেখ করতে চাই আমি। তবে পথ অনেক দূর, অনেক দীর্ঘ, এটা মনে রাখতে হবে। তাহলে এই আনন্দ-উচ্ছ্বাস তাদের অনেক দূর নিয়ে যাবে।

ঢাকা পোস্ট : একটা সময় পরে এখন কওমি তরুণদের যারা ভাষা চর্চায় এগিয়ে আসছে তাদের কোনও বার্তা দিতে চাইবেন কি?

শরীফ মুহাম্মদ : এ প্রশ্নের উত্তর অনেকটা আমি আমার আগের কথায় বলে দিয়েছি। তাদের অব্যাহতভাবে লেগে থাকতে হবে। ভাষা-সাহিত্যের কয়েকটি দিক আছে, সেসব দিকেও খেয়াল করতে হবে। 

সাহিত্যের একটি দিক হলো, সমকালীন এবং একটু আগের সাহিত্য পড়া, এর গতিপ্রবাহ, গদ্যের ভাঙচুর, গদ্যের সহজবোধ্যতাগুলো দেখা, শব্দ চয়নের বিষয়গুলো খেয়াল করা, মানুষ কোন বাক্য-শব্দের সঙ্গে বেশি পরিচিত তা খেয়াল করা। সৃজনশীলতা ব্যয় করে নিজের পক্ষ থেকেও বাক্য তৈরির যোগ্যতা অর্জন করা।

এর বাইরেও প্রচুর পড়তে হবে। লেখালেখির ক্ষেত্রে ইসলামপন্থী কিংবা আলমদের দুটি বিষয় পড়তে হবে, ১) ইসলাম  এবং ইসলামিক বিষয়গুলো পড়তে হবে। অন্তত যে যখন যে বিষয়টা নিয়ে কাজ করতে চান তখন তাকে সেটা পড়তে হবে, তাহলে ব্যক্ত করার ক্ষেত্রটির সমৃদ্ধি ঘটবে। ২) আধুনিক সাহিত্যের গতিপ্রবাহ, বাক্যের উপস্থাপন, চিন্তার উপস্থাপন-ভঙ্গিগুলো দেখতে হবে। 

সমকালীন সাহিত্যের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে হবে। তাহলে নিজের কাজ কোন পর্যায়ে আছে তা বোঝা যাবে এবং নিজেকে মাপা যাবে। এর ফলে তরুণ লেখকরা কোনও নির্দিষ্ট সীমানায় আবদ্ধ না থেকে সামনে অগ্রসর হতে পারবে।

ঢাকা পোস্ট : ঢাকা পোস্টকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ

শরীফ মুহাম্মদ :  ঢাকা পোস্ট এবং আপনাকেও ধন্যবাদ।

এনটি/কেএ