প্রতীকী ছবি

মহানবী (সা) এর জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর, তাৎপর্যপূর্ণ ও অলৌকিক ঘটনা হল মিরাজ। এই রাতে যেসব আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটেছে তা অন্য কোনো রাতে ঘটেনি। এজন্য এ রাত অতি মূল্যবান। এর অর্থ এই নয় যে, এই রাতে বিশেষ ইবাদত করতে হবে, উৎসব করতে হবে, মজলিস করতে হবে ইত্যাদি।

নবী (সা) এর সাহাবীরা এ রাতে কোনো উৎসব করেননি অথবা এই রাতকে নবীজি ও সাহাবারা বিশেষ মর্যাদাও দেননি। তাই এই রাতে কোনো বিশেষ ইবাদত করা, উৎসব করা, মজলিস করা ইত্যাদি শরীয়ত সম্মত নয়।

কোনো কোনো বইতে এই রাতে বিশেষ নামাজ পড়ার কথা বলা হয়েছে। যেমন প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১০০ বার আয়াতুল কুরসী এবং ২য় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১০০ বার সূরা ইখলাস পড়তে হবে। যে ব্যক্তি এভাবে ২ রাকাত নামাজ আদায় করবে তার জন্য জান্নাতে নির্ধারিত স্থানটি না দেখা পর্যন্ত তার মৃত্যু হবে না।

বিশিষ্ট আলেম আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (র) বলেন, এমন বিশেষ নামাজের কোনো দলীল পাওয়া যায় না। তা ভিত্তিহীন নামাজ।

নামাজ হলো মুমিনের মেরাজ। এটা সনদহীন বহুল প্রচলিত জাল হাদীস। এ ধরনের কথা হতে বিরত থাকতে হবে। নামাজ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস আছে, সেসব বলতে হবে।

মিরাজের রাত ইবাদাতের জন্য নির্দিষ্ট করা,এরাতে ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান করা, জিকির-আজকার করা, শবীনা খতম ও দোয়া অনুষ্ঠান করা, মিলাদ ও ওয়াজ মাহফিল করা (সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম করা), উদ্ভট গল্পবাজী, আতশবাজি, আলোকসজ্জা, কবর জিয়ারত, দান-সদকা করা, এ মাসে অধিক সওয়াবের আশায় ওমরাহ করা ইত্যাদি সুস্পষ্ট বিদআত।

সমাজে প্রচলিত আছে, ২৭ রজবে রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ। এমনকি অনেকের মধ্যে এ বিশ্বাস রয়েছে যে, এই একটি রোজার ফজিলত এক হাজার রোজার সমান। এ জন্য তাকে হাজারি রোজা বলে অভিহিত করা হয়। অথচ এ রোজার ব্যাপারে সহিহ ও গ্রহণযোগ্য কোনো বর্ণনা নেই।

আল্লামা ইবনুল জাওজি, হাফেজ জাহাবি, তাহের পাটনি, আবদুল হাই লখনবি (রহ.) প্রমুখ প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এ রোজার ফজিলতকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট হিসেবে অভিহিত করেছেন। (আলমাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ও শরহুল মাওয়াহিব ৮/১৮-১৯; আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ২/৪৭১; লাতায়িফুল মাআরিফ পৃ. ১৩৪)

এনটি