ভূমিকম্প-দুর্যোগের সময় নামাজে থাকলে করণীয়
আল্লাহ তায়ালা মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা যারিয়াত : আয়াত ৫৬)
এই দুই জাতির ওপর অর্পিত অন্যতম ফরজ ইবাদত হলো নামাজ। সময়মতো নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। কারও শরীরে সক্ষমতা থাকা পর্যন্ত নামাজ ছাড়ার কোনও অনুমতি নেই।
বিজ্ঞাপন
কখনও অসুস্থতার কারণে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে না পারলে বসে, শুয়ে, ইশারাতেও নামাজ আদায়ের কথা বলা হয়েছে।
ইসলামে নামাজের গুরুত্ব এতোটাই বেশি যে যুদ্ধের ময়দানেও নামাজে গড়িমসির সুযোগ দেওয়া হয়নি।
তবে বিশেষ প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক নামাজ ছাড়ারও অনুমতি রয়েছে। ইসলাম এমন কোনও ধর্ম নয় যা মানুষকে জেনেশুনে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। ইসলামে সবকিছু সহজ ও স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। তাই ভূমিকম্প, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলোচ্ছ্বাস বা অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনার সময় যদি কেউ নামাজের ভেতর থাকেন এবং নিজের জীবন নাশের আশঙ্কাবোধ করেন তাহলে এই মুহুর্তে নামাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে।
ফেকাহবিদ আলেমদের মতে, এই মুহুর্তে নামাজ ছেড়ে দেওয়া আবশ্যক হয়ে পড়ে। তবে এই নামাজ পরবর্তীতে স্বাভাবিক সময়ে আদায় করে নিতে হবে।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যদি তোমরা(শত্রুর) আশংকা কর, তবে পথচারী অথবা আরোহী অবস্থায়, (নামায পড়ে নাও)। অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ হও, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর; যেভাবে তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা তোমরা জানতে না।’ -(সুরা বাকারা, আয়াত, ২৩৯)
এই আয়াতের তাফসির থেকে আলেমরা ভূমিকম্প, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলোচ্ছ্বাস বা অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনার সময়ে নামাজের বিষয়টি সম্পর্কে এই অভিমত দিয়েছেন। -(আল-মুগনি: ৩/৯৭)
আলেমদের মতে, একইভাবে যদি কোনও ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার আশঙ্কা হয়, বা কেউ আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়, কিংবা নামাজে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির পাশে কোনও শিশুকে বিষাক্ত কোনও প্রাণী ছোবল মারার আশঙ্কা থাকে তাহলেও নামাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে এবং এক্ষেত্রে বিপদগ্রস্তদের উদ্ধার করা জরুরি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো না। আর ভালো কাজ করো; যারা ভাল কাজ করে আল্লাহ তাদেরকেই ভালোবাসেন। (সুরা বাকারা: ১৯২)
এনটি