টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। এবারের আয়োজনটি ৫৬তম। ৫৬তম এই আয়োজনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে দুই বছর। সর্বশেষ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্ব ইজতেমার ৫৫তম আয়োজন। এরপর বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রকোপে থেমে ছিল বিশ্ব মুসলিমদের মিলনমেলার এই আসর। হজের পর বিশ্ব ইজতেমাকেই বলা হয় মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণজমায়েত।

বিভিন্ন মিডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশ-বিদেশ থেকে ২৫ লাখের কাছাকাছি মানুষ একত্রিত হন বিশ্ব ইজতেমায়।

আপর রব ও ধর্ম থেকে বিমুখ মানুষকে আল্লাহমুখী করতে প্রায় ১৯২৪ সালে ঈমানী এই জামাতের প্রতিষ্ঠা করেন হজরতজি মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলবী রহ.। তার পদাঙ্কন অনুসরণ করে বর্তমান আধুনিক বিশ্বে আল্লাহর রাসুলের দ্বীনকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে এই জামাত। এই জামাতের মানুষগুলোর মিলনমেলা বিশ্ব ইজতেমা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে দিয়েছে এক নতুন পরিচিতি।  

বিশ্বের বুকে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় অনেক ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শিরোনাম হয় বাংলাদেশ। কোনওটি চাঞ্চল্যকর রাজনৈতিক, আবার দুর্নীতির ঘটনাও লজ্জা দেয় দেশকে বিশ্ব দরবারে। কিন্তু এতো সব ঘটনার মাঝে বিশ্ব ইজতেমাই বহির বিশ্বে বাংলাদেশের পচিরয়টা ফুঁটিয়ে তুলে বুক উচুঁ করে। সুশৃঙ্খল আয়োজন, বিশ্বাসী মানুষের বৈশ্বিক গণজমায়েত-বিশ্বের বুকে একটি অনন্য উদাহরণ তৈরি করে। বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক দেশ হিসেবে গর্ব করার মতো একটি পরিচয় দিতে পারি আমরা।

রাতের বিশ্ব ইজতেমা, ছবি : ইখলাস আল ফাহীম

 

তাবলিগ জামাতের উদ্দেশ্য

ইলিয়াস রহ.-এর প্রতিষ্ঠিত তাবলিগ জামাত মূলত মানুষকে তার বরের পথে চলার আহ্বান করে, ব্যক্তি জীবনের কাজ-কর্ম, অফিস, ব্যবসা-বাণিজ্য, অন্য সব কিছুর সঙ্গে মিলিয়ে ইসলামী বিধান ও রাসুলের নির্দেশ পালন করা যে কোনও কষ্টসাধ্য বিষয় নয় তাই শেখাতে চায় তাবলিগ জামাত।

তাবলিগ জামাত মানুষকে বলে, রাসুল সা. এর সাথে থেকে সাহাবারা যেসব আমল করে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় হয়েছেন, আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন সেই গুণগুলো অর্জন করে চলার আহ্বান করে তাবলিগ জামাত।

ব্যক্তি জীবনে ইসলাম মেনে চলতে সবার জন্য যেসব বিষয় জানা আবশ্যক তাবলিগ জামাত মূলত এমন ৬টি গুণ অর্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। তারা বলে, ‘রাসুল সা. এর সাথে থেকে সাহাবারা মেহনত করে আমল করার কারণে অনেক গুণে গুণান্বিত হয়েছিলেন, ওই গুণের উপর মেহনত করে আমল করতে পারলে দ্বীন ইসলামের ওপর চলা অতি সহজ’।

গুণগুলো হচ্ছে, ১. কালিমা ২. নামাজ ৩. এলেম ও জিকির ৪. একরামুল মুসলিমিন ৫. সহি নিয়ত ৬. দাওয়াতে তাবলিগ।