প্রতীকী ছবি

সুবহে সাদিক হলো সেই সময় বা ক্ষণ যখন থেকে রোজা শুরু করতে হয় এবং ফজর নামাজের ওয়াক্তও একই সময় থেকেই শুরু হয়।

সুবহে সাদিক বলা হয়,  রাতের শেষ দিকে পূর্ব দিগন্তের উভয় দিকে ক্ষীণ (দিগন্তের সাথে ভার্টিক্যালি) প্রশস্ত আকারে যে আলো প্রকাশ পায় তখন থেকে সাহরির সময় শেষ হয়ে যায় এবং এরপর থেকেই ফজরের সময় শুরু হয়। ফিকহের পরিভাষায় এই সময়টির নাম সুবহে সাদিক।

এই সময়টির ব্যাপারেই আল্লাহ কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেছেন-

‌‌‘আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না রাতের কাল রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত হয়।’-সূরা বাকারা ১৮৭ এই আয়াতে ভোরের সাদা রেখার দ্বারা সুবহে সাদিকের আলোকে বুঝানো হয়েছে।

ফজরের নামাযের ওয়াক্ত শুরু হয় ‘ফজরের’ সময় অর্থাৎ সুবহে সাদিক উদিত হওয়া থেকে এবং সূর্য উদিত হওয়ার সূচনামুহূর্তে তা শেষ হয়। এটা তো একটি স্বতঃসিদ্ধ মাসআলা- যা সকলেই জানেন।

‘সুবহে সাদিক’ আর ‘তুলুয়ে শামস’ (সূর্য উদয়) উভয়টিই হচ্ছে প্রকাশ্য আলামত। আর গোটা দুনিয়ার মুসলিমসমাজ এ আলামাতের ভিত্তিতেই বছরব্যাপী ফজর আদায় করেন এবং রমযানে সাহরী শেষ করেন।

এবার আসা যাক এই সুবহে সাদিক এর টাইম একুরেট কখন শুরু হয় সেটা নিয়ে- আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের বক্তব্য অনুযায়ী সুবহে সাদিক বা ফজর শুরু হয় সূর্যের দিগন্তের নিচে ১৮° তে থাকা অবস্থায়। সূর্যোদয়ের আগে ভোরের সময় পূর্ব আকাশে এবং সূর্যাস্তের পর সন্ধ্যার সময় পশ্চিমাকাশে যে আলো দেখা যায় তাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় টয়লাইট (Twilight) বলা হয়। আরবি পরিভাষায় টোয়লাইটকে (শাফাক) বলা হয়, বাংলায় বলা হয় লালীমা।

সূর্য যখন দিগন্তের ৬° নিচে থাকে ঐ সময়ের আলোকে Civil Twilight, যখন ১২° নিচে থাকে যখন তখনকার আলোর নাম Nautical Twilight,আর Astronomical Twilight হল ঐ আলো, যা সূর্য দিগন্তের ১৮° নিচে থাকা অবস্থায় দেখা যায়। পর্যবেক্ষকের অবস্থানের সাপেক্ষে ৩৬০ ডিগ্রি অনুপাতে সূর্য দিগন্তের কত ডিগ্রি নিচে রয়েছে সেটাই এইখানে বোঝানো হয়েছে।

এখন কথা হল শরীয়ত ইবাদতের সময়কে নির্দিষ্ট কোনো ডিগ্রির সাথে যুক্ত করে দেয়নি। যুক্ত করেছে দৃশ্যমান আলামত বা পর্যবেক্ষণের সাথে। তবে যদি বার বার পর্যবেক্ষণ/নিরীক্ষণের পর জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাবের শুদ্ধাশুদ্ধির ব্যাপারে পরিপূর্ণ আস্থাশীল হওয়া যায়, তাহলে তা গ্রহণ করতে এবং তার আলোকে সময়সূচী তৈরি করতে কোন সমস্যা নেই।

এনটি