ওমরা করতে সাইকেল চালিয়ে মক্কায় নাইজেরিয়ান তরুণ
ওমরা পালন ও মসজিদে নববীতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জিয়ারত করতে সাইকেল চালিয়ে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন নাইজেরিয়ার এক তরুণ। সাইকেল চালিয়ে সৌদি আরবে পৌঁছাতে তার দুই বছর সময় লেগেছে। সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এই তরুণের নাম আলিয়ান আব্দুল্লাহ বালা। তিনি ৮ ডিসেম্বর জেদ্দায় পৌঁছান। এসময় নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইয়াহইয়া লাওয়ালের পক্ষ থেকে জেদ্দায় কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তারা তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
বিজ্ঞাপন
রাষ্ট্রদূত লাওয়াল আরব নিউজকে বলেছেন, ‘তাকে সম্ভাব্য সবধরনের কনস্যুলার সহায়তা, নির্দেশনা এবং উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সাইকেলে করে পবিত্র শহর মক্কা ও মদীনায় তার ওমরা যাত্রার সব সুবিধজনক ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
নাইজেরিয়ান দূতাবাসও একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘নাইজেরিয়ান মিশন নাইজেরিয়া থেকে সাইকেল চালিয়ে সৌদি আরবে ওমরা করতে আসা তরুণকে স্বাগত জানায়।
আলিয়ান আব্দুল্লাহ বালা মক্কায় ওমরাহ এবং মদিনায় মসজিদে নববীতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জিয়ারতের জন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জোস, মালভূমি ছেড়েছিলেন, এবং তার ইচ্ছা পূরণে নিরাপদে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।’
মসজিদে নববীতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জিয়ারত করে জেদ্দায় ফেরার পর নাইজেরিয়ান সাইকেল চালক এই তরুণের সঙ্গে দেখা করেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে এক ফোন কলে আরব নিউজের সঙ্গে কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ বালা বলেন, ‘এটা ছিল আমার সারা জীবনের সেরা অর্জন, আমার স্বপ্নের বাস্তবতা, আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি তিনি আমাকে ওমরার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধান পালনের ক্ষেত্রে এমন উদ্যোগ নেওয়ার সাহস দিয়েছেন, পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল থেকে সাইকেল চালিয়ে পবিত্র শহরে পৌঁছা অনেক কঠিন ছিল, কিন্তু তা এখন আমার জন্য কোনও ব্যাপার নয়। আমাকে সমর্থন, উৎসাহ ও সাহস দেওয়ার জন্য আমি নাইজেরিয়ান দূতাবাস এবং কনস্যুলেটের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আধুনিক সময়ে নাইজেরিয়া থেকে ওমরা যাত্রা শুরু করা প্রথম ব্যক্তি বালা। সৌদি আরবে পৌঁছার পর থেকে তিনি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।
বালা সাইকেল চালিয়ে সৌদিতে পৌঁছতে যাত্রাপথে অসংখ্য বাধা-বিপত্তি ও বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি ডাকাত. মোবাইল ফোন চোর এবং বন্য প্রাণীদের হুমকির সম্মুখীন হন। যাত্রাপথে বালা প্রায় বিভিন্ন ঝোপের মধ্যে ঘুমাতেন।
বালার কাছ থেকে এমন সব ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা শোনার পর সুদানের একটি ছোট শহরের লোকেরা তাকে একটি নতুন মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছিলেন।
যাত্রাপথে অনেক শহরের মানুষ তাকে আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করতো। বালা বলেন,আমি যেসব শহরের মধ্য দিয়ে গেছি সেখানে আমাকে বীরের মতো স্বাগত জানানো হয়েছিল। অনেকেই আমাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা ও সমর্থন দিয়েছেন।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়, বালা মক্কায় ওমরাহ এবং মদিনায় মসজিদে নববীতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জিয়ারতের পর ফ্লাইটে করে দেশে ফিরে গেছেন।
এর আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে, ব্রিটিশ ওমরাপালনকারী অ্যাডাম মোহাম্মদ হজ পালন করতে ইংল্যান্ডের উলভারহ্যাম্পটন থেকে পায়ে হেঁটে মক্কায় যান। তিনি নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, তুর্কিয়ে, লেবানন, সিরিয়া এবং জর্ডান হয়ে সৌদি আরবে পৌঁছান।
তিনি ২৬শে জুন মক্কার আয়েশা মসজিদে পৌঁছেছিলেন, সেখানে যুক্তরাজ্য ও বিভিন্ন দেশের হজযাত্রীদের একটি বিশাল বহরসহ স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
সূত্র : আরব নিউজ
এনটি