কৃমি বের হলে অজু ভাঙে?

কৃমির সমস্যায় ভোগেন মোটামুটি সবাই। কৃমির সমস্যা হলে কিছু কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন-বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা, পেট মোটা বা ভারি হওয়া, খাবারে অরুচি, মুখে থুথু ওঠা এবং কোনো কোনো কৃমিতে পায়খানার রাস্তার পাশে চুলকানি হতে পারে। 

কৃমি অনেক সময় শিশুদের মুখ দিয়ে হয়, আবার পায়খানার রাস্তা দিয়েও বের হয়। এমন হলে অজু ভেঙে যায়। চাই কৃমির শরীরে কোন নাপাক লেগে থাকুক বা না লেগে থাকুক। তাই কৃমি বের হওয়ার পরে আবার নতুন করে অজু করতে হবে।

অজু ভঙের কারণের মধ্যে বলা হয়েছে, পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)

তবে যদি কারো কৃমির সমস্যা এতো বেশি বের হয় যে, এক ওয়াক্তের মধ্যে চার রাকাত নামাজ পড়ার সময় পাওয়া যায় না, পুরো সময় কৃমি বের হয়, তাহলে এমন ব্যক্তিকে মাজুর (অসুস্থ) বলে গণ্য করা হবে। 

এমন অসুস্থ ব্যক্তির বিধান বিধান হল, যদি কোন নামাজের পুরো ওয়াক্ত (সময়) কৃমি বের হতে থাকে, তাহলে অজু করবে এবং ওই অবস্থায় নামাজ পড়বে। ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর আবার নতুন করে অজু করে নামাজ পড়বে। 

মৌলিকভাবে অজু ভঙ্গের কারণ ৭টি। যথাক্রমে-

এক. পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া।

যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও)।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০৬ )

আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয় রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়...।’ (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস : ৫৬৮)

দুই. রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া : ১/১০)

আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ১১০)

তিন. মুখ ভরে বমি করা।

আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)

চার. থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।

হাসান বসরি রহ. বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)

পাঁচ. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়।’ [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০২)

ছয়. পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে।

হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ্ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৯৩)

সাত. নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে।

এনটি