মক্কার আকাশে বর্ণিল সাজে কোরআনের আয়াত প্রদর্শন
সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক জাবালে নুরে লেজার লাইটে পবিত্র কোরআনের কিছু আয়াতের প্রদর্শন করা হয়। লেজার লাইটের এসব দৃশ্য মুগ্ধ করছে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের। এর মধ্যে আছে কোরআনে বর্ণিত পাহাড়সংশ্লিষ্ট সুরা নাবার পাহাড় সাত নম্বর আয়াত। আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উপলক্ষে এই প্রদর্শনী কর হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর মক্কার ‘হিরা কালচারাল ডিস্ট্রিক’ এক টুইট বার্তায় দৃষ্টিনন্দন এই প্রদর্শনীর চারটি দৃশ্যের ছবি প্রকাশ করে।
বিজ্ঞাপন
সুরা নাবার ৭ নম্বর আয়াতটির অর্থ হলো, ‘এবং আমি কি পাহাড়কে পেরেক হিসেবে করিনি?’ আরেকটি দৃশ্যে আছে পবিত্র কোরআনের সুরা আলাকের প্রথম আয়াত যার অর্থ, ‘আপনি আপনার রবের নামে পড়ুন, যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। ’
আরেকটি দৃশ্যে শুধু ‘ইকরা’ (আপনি পড়ুন) এবং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ আল্লাহ রাসুল)।
৬৪২ মিটার উঁচু জাবালে নুর বা নুর পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত ঐতিহাসিক হেরা গুহা। ইসলামের ইতিহাসে নুর পর্বতের ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। এটি সৌদি আরবের মক্কা আল-মুকাররমায় পবিত্র কাবাঘর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।
এখানেই মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে প্রথম ওহি এসেছিল। ওহি আসা শুরুর আগে দীর্ঘ সময় তিনি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এই গুহায় এসে ইবাদতে মগ্ন থাকতেন।
সেন্টার ফর দ্য হিস্টোরি অব মক্কার পরিচালক ড. ফাওয়াজ দাহাস বলেন, ‘ইতিহাসে হেরা পর্বত নামে পরিচিত হলেও পরবর্তী সময়ে এর নাম জাবালে নুর বা আলোর পর্বত করা হয়। কারণ এখানেই পবিত্র কোরআনের প্রথম আয়াত নাজিল হয়েছিল, যার মাধ্যমে পুরো পৃথিবী আলোকিত হয়েছিল। ’
জাবালে নুরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল-আজহারি বলেন, জাবালে নুরের ওপর স্থাপিত লেজার লাইটে প্রজ্বলিত পবিত্র কোরআনের আয়াতগুলো দর্শকদের মধ্যে ভিন্ন ধরনের অনুভূতি তৈরি করেছে। তা দেখে দর্শকদের মধ্যে তৈরি হয় আধ্যাত্মিক আবহ, ভক্তি ও শ্রদ্ধা।
সৌদি ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নে দ্য রয়েল কমিশন ফর মক্কা সিটি অ্যান্ড হলি সাইটসের তত্ত্বাবধানে জাবালে নুরসহ ঐতিহাসিক স্থানগুলো নিয়ে কাজ করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
মক্কার ধর্মীয় স্থাপনাগুলো ৬৭ হাজার বর্গমিটারের চেয়েও বড় এলাকাজুড়ে হিরা কালচারাল ডিস্ট্রিক প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। শিগগিরই তা সবার জন্য উন্মুক্ত হবে। এসব স্থানগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে দর্শনার্থীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতাকে আরো সমৃদ্ধ করা হবে।
প্রাক-ইসলামী যুগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মহানবী (সা.)-এর ইতিহাসকে পরিচিত করাই এর অন্যতম লক্ষ্য। এখানে সাংস্কৃতিক ও পর্যটন স্পট ছাড়াও থাকবে রিভিলেশন গ্যালারি ও হলি কোরআন মিউজিয়াম।
এদিকে সাময়া ইনভেস্টমেন্ট কম্পানির মাধ্যমে মক্কায় মিউজিয়াম অব রিভিলেশন ও মিউজিয়াম অব মাইগ্রেশন দুটি সাংস্কৃতিক প্রকল্প গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র : আরব নিউজ, আল আরাবিয়া