কবরের আজাব থেকে বাঁচার দোয়া
মৃত্যুর পর মানুষের প্রথম ঠিকানা কবর। কবর-জীবনকে শরিয়তের পরিভাষায় ‘হায়াতুল বারযাখ’ বলা হয়। এটি মানুষের জন্য শান্তি-সুখের আধার হতে পারে। আবার শাস্তি-আজাবের বন্দিশালাও হতে পারে।
আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বা মুসলিম উম্মাহর ঐক্য মতে আকিদাতগত মাসআলা এটি। রাসুল (সা.) কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া করতেন।
বিজ্ঞাপন
বর্ণিত হয়েছে, কবরের শাস্তি প্রতিটি প্রাণ ও দেহকে পেতে হবে। আলেম-উলামা ও হাদিসবিশারদদের বক্তব্যে এটি প্রতীয়মান। তাই সর্বোপরি প্রতিটি মুসলিমের উচিত কবরের আজাবকে বিশ্বাস করা ও ঈমান রাখা। (আজাবুল কবর ওয়া নাইমুহু, আল-ইসলাম সুওয়ালুন ওয়া জাওয়াব : ০৪-১১-২০১৮)
ব্যক্তির কবর-জীবন ও পার্থিব জীবন একটি আরেকটির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কবরের জীবন সম্পূর্ণ আলাদা ও অন্য রকম। পৃথিবী থেকে কবরের প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হয়। এরপর কবরে ফিরেশতাদের কাছে উত্তর দিতে হয়। এর ভিত্তিতে কবর জাহান্নামের গর্তে কিংবা জান্নাতের এক টুকরো বাগানে পরিণত হয়। (তাবিয়াতুল হায়াত ফিল কবর; আল-ইসলাম সুওয়ালুন ওয়া জাওয়াব : ০৪-১১-২০১৮)
যেসব কারণে কবর আজাব
কবরের আজাব হওয়ার বহু কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে কিছু উল্লেখ্য-
এক. প্রস্রাব থেকে পরিচ্ছন্ন না হলে। এটা দুইভাবে হতে পারে; শরীরে ও কাপড়ে প্রস্রাবের ফোঁটা ও ছিঁটা পড়া। তাই এমন স্থানে বা এমনভাবে প্রস্রাব করা উচিত নয়, যাতে প্রস্রাবের ছিঁটেফাঁটা গায়ে ও কাপড়ে না পড়ে।
আরেকটি হলো- প্রস্রাবের পর নির্দিষ্ট অঙ্গ পরিস্কার না করা। অথবা যথাযথভাবে পরিচ্ছন্ন না হওয়া।
দুই. গিবত-পরনিন্দা, অন্যের দোষ খোঁজা ও ছিদ্রান্বেষণ, সম্পদ হরণ, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা ও প্রাপ্য থেকে অন্যকে বঞ্চিত করা। তিন. কোরআন-হাদিস অস্বীকার করা। কোরআন তেলাওয়াত বা অধ্যয়ন না করা। চার. ফরজ নামাজ না পড়ে ইচ্ছাকৃত ঘুমানো। পাঁচ. মিথ্যা বলা, সুদ খাওয়া ও জিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। (ড. আবদুল্লাহ ইবনে হামুদ আল-ফারিহ; মিন আসবাবি আজাবিল কাবরি মাআদ দলিল, শাবকাতুল আলুকাহ : ০৪-১১-২০১৮)
কবর আজাব থেকে মুক্তির উপায়
অধিকহারে মৃত্যুর স্মরণ। এটি গুনাহ ও অপরাধ থেকে বাঁচতে মানুষের জন্য সহায়ক। তাওবার প্রতি ধাবিত হতে উদ্দীপ্ত করে। সৎকাজে উদ্বুদ্ধ করে। পরকালের ব্যাপারে ভীতি সঞ্চার করে। ঈমান-বিশ্বাসে সঞ্জীবিত করে।
এছাড়ও আল্লাহর প্রতি ঈমান, সৎকাজ, তাওহিদ-বিশ্বাস ও তাকওয়ায় অটলতা, আল্লাহর রাস্তায় গমন ও শাহাদত বরণ, নিয়মিত সুরা মুলক পাঠ এবং সময়োপযোগী আমল-ইবাদত ইত্যাদি কবর আজাব থেকে রক্ষা করে। (ড. খালিদ রাতিব, আল-আসবাব আল-মুনজিয়া মিন আজাবিল কবর; শাবকাতুল আলুকাহ : ০৪-১১-২০১৮)