প্রতীকী ছবি

আল্লাহ তায়ালার ওপর বিশ্বাস স্থাপন ও ইসলামকে ধর্ম হিসেবে মেনে নেওয়ার পরই একজন মুসলমানের জন্য শরীয়তের যাবতীয় বিধান পালন করা ফরজ হয়ে যায়। ঈমানের পরই আসে নামাজ আদায়ের বিধান। রোজা, হজ, জাকাত- এসব বিধান নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য ফরজ। তবে সব সময় আল্লাহর ওপর ঈমান রাখা ও প্রতিদিন সময় মতো নামাজ পড়া সবার জন্য ফরজ। এতে অলসতা বা গড়িমসি করার কোনও সুযোগ নেই।

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেকোনো অবস্থাতেই অবশ্যই আদায় করতে হয়। কেউ অসুস্থ হলেও নামাজ ছেড়ে দেওয়ার কোনও বিধান নেই। নামাজে নির্দিষ্ট ফরজ কিছু কাজ আছে যেগুলো পালন করতেই হয়। না করলে নামাজ আদায় না। এমন দু’টি কাজ হলো রুকু ও সেজদা করা। নামাজে রুকু-সেজদা করা ফরজ। আর রুকু-সেজদায় তাসবিহ পড়া সুন্নত।

প্রত্যেকবার রুকু-সেজদায় তাসবিহ কমপক্ষে তিনবার পড়া সুন্নত। এ বিষয়ে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন রুকু করে তখন সে যেন তিনবার ‘সুবাহানা রাব্বিয়াল আজিম’ বলে এবং যখন সিজদা করে তখন যেন তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ বলে। যখন সে এভাবে চরবে তখন তার রুকু ও সিজদা পূর্ণ হবে। আর এটাই হলো তাসবিহ আদায়ের সর্বনিম্ন পরিমাণ। -(খুলাসাতুল ফাতাওয়া- ১/৫৪)

তাই ইচ্ছা করে তিনবারের কম তাসবিহ পড়া উচিত নয়। এমন করলে তা সুন্নত পরিপন্থী কাজ হিসেবে গণ্য হবে। নামাজে সুন্নতের প্রতি অযত্ন-অবহেলা দেখানো নিন্দনীয় কাজ। কারণ, হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সবচেয়ে নিকৃষ্ট চোর ঐ ব্যক্তি, যে নামাযে চুরি করে। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, নামাযে কীভাবে চুরি করে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নামাযের রুকু, সিজদা ঠিকভাবে আদায় না করা (ই হচ্ছে নামায চুরি করা) -(মুসনাদে আহমদ ৩/৫৬) 

তাই নামাজে তাসবিহগুলো সময় নিয়ে সুন্নত পদ্ধতীতে আদায়ের চেষ্টা করা উচিত। তবে কেউ যদি তাসবিহ তিনবারের কম পড়ে তাহলে এতেও তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে এটাকে অভ্যাস বানানো যাবে না। (শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ২৮২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৯৪ ইমামের সঙ্গে রুকুতে শরিক হওয়া : ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৯৫)

এনটি