শুধু তিন তাকবিরে জানাজা নামাজ শেষ করলে করণীয়
কোনও মুসলমান ইন্তেকাল করলে অপর মুসলমানের ওপর কয়েকটি দায়িত্ব বর্তায়। এর একটি হলো জানাজা নামাজ আদায় ও জানাজা বহন করা। মৃতের রুহের মাগফেরাত কামনায় তার মৃতদেহ সামনে নিয়ে বিশেষ নিয়মে নামাজ ও দোয়া করাকে জানাজার নামাজ বলা হয়। শরীয়তের দৃষ্টিতে জানাজার নামাজ পড়া ফরজে কেফায়া।
কারো ইন্তেকালের পর মহল্লার সবাই অথবা বাড়ির দুয়েকজন মিলে আদায় করে নিলে সবার পক্ষ থেকে ফরজে কেফায়ার বিধান আদায় হয়ে যায়। আর মহল্লার কেউ আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হবে। তাই জীবিতদের জন্য মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজে অংশ নেওয়া উচিত।
বিজ্ঞাপন
জানাজার নামাজের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনও মুসলমানের জানাজায় শরিক হয়ে নামাজ পড়ে এবং তাকে কবরও দেয় সে দুই কিরাত নেকি পাবে। আর যে ব্যক্তি শুধু জানাজার নামাজ পড়ে কিন্তু মাটি দেয় না, সে এক কিরাত নেকি পাবে। সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, দুই কিরাতের পরিমাণ কতটুকু? তিনি বললেন, প্রত্যেক কিরাত উহুদ পাহাড় সমান নেকি।’
-(বুখারি : ৪৭; মুসলিম : ৯৪৫; তিরমিজি : ১০৪০; নাসায়ি : ১৯৯৪; আবু দাউদ : ৩১৬৮; ইবনে মাজাহ : ১৫৩৯)
কেয়ামতের দিন যখন আল্লাহ তায়ালা সবার হিসেবের খাতা খুলবেন, তখন নেক আমলই কাজে আসবে। তাই নেকি অর্জনের কোনও সুযোগই হাত ছাড়া করা উচিত নয়। প্রত্যেকটি কাজ ও আমলের যেমন ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম আছে, জানাজা নামাজেরও একটি স্বতন্ত্র পদ্ধতী আছে।
জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম হলো, এতে মৃতকে কিবলার দিকে রেখে ইমাম তার বক্ষ বরাবর দাঁড়ান। এর পর নিয়ত করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবির দিয়ে আল্লাহর হামদ ও সানা পড়া হয়। নবীজি (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া হয়। মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয়। এরপর সালাম ফেরানো হয়। জানাজা নামাজে ‘আল্লাহু আকবার’ তাকাবিরটি চারবার বলতে হয়।
জানাজা নামাজে এই চার তাকবির বলা ফরজের অন্তর্ভূক্ত। তাই কোনও ইমাম যদি ভুল বশত জানাজা পড়ানোর সময় তিন তাকবির দেয় তাহলে জানাজা নামাজ আদায় হবে না।
ফেকাহবিদ আলেমদের মতে, চার তাকবিরের কম হলে জানাজা নামাজ সহীহ হয় না। তাই জানাজা নামাজে একটি তাকবির কম হলে নামাজ আদায় হবে না। -(সহীহ বুখারী ১/১৭৭-১৭৮; সহীহ মুসলিম ১/৩০৯; উমদাতুল কারী ৮/১৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/২২৪)
এনটি