প্রতীকী ছবি

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আল্লাহ তাআলা ফরজ করেছেন। যে যেখানেই এবং যে অবস্থাতে থাকুক— নামাজ অবশ্যই আদায় করতে হয়। কেউ অসুস্থ হলে কিংবা যানবাহনে থাকলে, তার নামাজেরও সুরত ও পদ্ধতি রয়েছে।

আগের নবীদের যুগেও নামাজের বিধান ছিল। তবে পদ্ধতিগতভাবে পার্থক্য ছিল। কিন্তু তাদের পরবর্তীতে লোকেরা নামাজের ব্যাপারে অবহেলা শুরু করে। অথচ ফরজ নামাজ আদায় না করা ভয়াবহ গোনাহের কাজ। আর এর কঠিন পরিণতি হলো- চিরদুঃখের ও কষ্টের জাহান্নাম।

নামাজের একটি অপরিহার্য বিষয় কেরাত পাঠ করা। ফজর, মাগরিব ও এশার নামাজে ইমাম উচ্চৈঃস্বরে কেরাত পাঠ করেন। আর জোহর ও আসরের নামাজে অনুচ্চৈঃস্বরে কেরাত পাঠ করেন।

ইমাম যখন কেরাত পাঠ করেন তখন মুক্তাদিদের চুপ থাকতে হয়। হানাফি মাজহাব অনুযায়ী ইমামের পেছনে কোনোক্রমেই মুক্তাদি কেরাত পড়তে পারবে না। জুমা ও ঈদের নামাজেও উচ্চৈঃস্বরে কেরাত পাঠ করা হয়। একা একা নামাজের সময় অনুচ্চৈঃস্বরেই কেরাত পাঠ করতে হবে।

এখন জানার বিষয় হল, কোনো ব্যক্তি যদি ভুলে ইমামের পিছনে কেরাত পড়ে ফেলে তাহলে কি তাকে সাহু সিজদা দিতে হবে অথবা এমন হয়ে গেলে মুসল্লি কী করবেন?

এ মাসআলার ক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ وَأَنصِتُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

যখন কুরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা শোনো মনোযোগ সহকারে এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। (সূরা আ’রাফ ২০৪)
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,

مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ فَقِرَاءَتُهُ لَهُ قِرَاءَةٌ

যে ব্যক্তির ইমাম আছে তার ইমামের কেরাতই তার জন্য কেরাত বলে ধর্তব্য হবে। (সুনানে ইবন মাজাহ ৮৫০)

এ কারণেই উপরোক্ত দলিলসহ আরো বহু দলিলের ভিত্তিতে হানাফি মাজহাবের ফকিহগণ এবং অন্যান্য মাজহাবের অধিকাংশ ফকিহ বলে থাকেন যে, মুক্তাদি ইমামের পিছনে কেরাত পড়বে না। যদি পড়ে তাহলে তা মাকরূহ হবে। কেননা, আলী রা. বলেছেন,

من قرأ خلف الإمام فقد أخطأ الفطرة

যে ব্যক্তি ইমামের পিছনে কেরাত পড়ল সে স্বভাববিরোধী কাজ করল। (কাবীরী ৫২৭)

তবে যেহেতু নামাজের ক্ষেত্রে মুক্তাদী ইমামের অনুগত তাই ফকিহগণ বলেন,

وسهو المقتدى لا يوجب السهو

মুক্তাদীর ভুলের কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। (প্রাগুক্ত ৪৬৫)

সুতরাং প্রশ্নোক্ত সূরতেও মুক্তাদীর উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।

উত্তর দিয়েছেন :  শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

এনটি