নবীজির সুপারিশ পাবেন যারা
প্রতীকী ছবি
হাশরের মাঠে পাঁচ স্তরের লোকদের জন্য সুপারিশ করা হবে। আর পাঁচ স্তরের জন্যই সুপারিশ করবেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)।
পাঁচ স্তরের লোক হলো-
বিজ্ঞাপন
১. হাশরের ময়দানে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে অতি শিগগির হিসাব-নিকাশের কাজ শুরু করার জন্য নবীগণের কাছে যেতে শুরু করবে। কিন্তু সবাই অপারগতা প্রকাশ করার পর বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হবে এবং তিনি পৃথিবীর সমস্ত মানবজাতির জন্য সুপারিশ করবেন।
২. দ্বিতীয় সুপারিশ হবে প্রথম দরজার মুমিনগণকে হিসাব-নিকাশ ছাড়াই বেহেশতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য। এটাও শেষ নবীই করবেন।
৩. তৃতীয় সুপারিশ হবে যারা স্বীয় অপকর্মের কারণে জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। এ সুপারিশ নবীজি (সা.) করবেন। তা ছাড়া আলেম-হাফেজ, শহীদ এবং অন্যান্য মুমিনগণও করবেন।
৪. চতুর্থ সুপারিশ হবে ওইসব গুনাহগারের জন্য যাদেরকে জাহান্নামে দাখিল করা হয়েছে। তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আরজ পেশ করা হবে। নবী মুহাম্মদ (সা.)-সহ অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরাম এবং ফেরেশতাগণ এ জন্য সুপারিশ করবেন।
৫. পঞ্চম সুপারিশ করা হবে বেহেশতে প্রবেশকারীদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি এক দাওয়াতে নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। একসময় তিনি বললেন, ‘আমি কিয়ামতের দিন সবার সর্দার হব। সেই কঠিন দিনে কষ্ট সইতে না পেরে মানুষ অস্থির হয়ে যাবে এবং কার দ্বারা সুপারিশ করলে আল্লাহ কবুল করবেন সেরূপ লোক তালাশ করতে থাকবে। অতঃপর অন্য নবীগণ থেকে ব্যর্থ হয়ে সবশেষে লোকজন আমার কাছে এসে বলবে, আপনি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, আমাদের কষ্ট তো আপনি দেখেছেন, এখন দরবারে এলাহিতে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন যাতে আমাদেরকে পরিত্রাণ দেওয়া হয়।
নবীজি (সা.) বলেন, আমি তখন আল্লাহর আরশের নিচে এসে সিজদায় পড়ে কান্নাকাটি করতে থাকব। অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হবে, আপনি মাথা ওঠান এবং ফরিয়াদ পেশ করুন। আপনার ফরিয়াদ কবুল করা হবে। আমি তখন মাথা উঠিয়ে বলব, হে প্রভু! তুমি আমার উম্মতগণকে ক্ষমা কর। আল্লাহ তায়ালা বলবেন, হে আমার প্রিয় নবী! আমার বেগুনাহ বান্দাদেরকে বেহেশতের ডান দিকের দরজা দিয়ে প্রবেশ করান। অন্য দরজা দিয়েও ইচ্ছে করলে ঢোকাতে পারেন।’
সেদিন শুধুমাত্র আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-ই সুপারিশ করতে পারবেন।
হজরত আউফ বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে এক দূত এসে আমাকে জানালেন যে, আল্লাহ তায়ালা আমাকে দুটি প্রস্তাব দিয়ে পাঠিয়েছেন। এ দুটির মধ্যে থেকে যেকোনো একটি গ্রহণ করতে হবে।
প্রস্তাব দুটি হলো ১. আমার অর্ধেক উম্মতকে বিনা হিসাবে বেহেশতে দেওয়া হবে। ২. আমি যেকোনো উম্মতের জন্য আমার ইচ্ছেমতো সুপারিশ করতে পারব। আমি সুপারিশ করার ক্ষমতাটাকেই গ্রহণ করেছি। কাজেই অমি মুশরিক ব্যতীত সবার জন্য শাফায়াত করব।
লেখক : সাংবাদিক, আলেম লেখক ও গবেষক