প্রতীকী ছবি

কোরআন তেলাওয়াত মানুষের অন্তরে প্রশান্তি সৃষ্টি করে। কালামুল্লাহর তেলাওয়াতেই একজন মুমিন খুঁজে পায় ঐশ্বরিক স্বাদ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‌‌‌‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।’ (সুরা রা‘দ, আয়াত : ২৮) 

এই ঐশীগ্রস্থে আল্লাহ তায়ালা মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি, পারস্পরিক বন্ধন, ভালোবাসা, জীবন ব্যবস্থা সবকিছুর বর্ণনা তুলে ধরেছেন। মানুষের একে অপরের সঙ্গে সুদৃঢ় ও সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক কিভাবে তৈরি হবে তা নিয়েও একাধিক আয়াত নাজিল হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজদের গৃহ ছাড়া অন্য কারও গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।’-(সূরা নূর, আয়াত: ২৭)

অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘তবে তোমরা যখন কোন ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা নিজদের ওপর সালাম করবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকতপূর্ণ ও পবিত্র অভিবাদনস্বরূপ’। -([সূরা নূর, আয়াত: ৬১)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যখন তোমাদেরকে সালাম দেয়া হবে তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে। অথবা জবাবে তাই দেবে’। -(সূরা নিসা, আয়াত: ৮৬) 

সালামের বিশেষ ফজিলত সম্পর্কে হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ না তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা গড়ে উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালবাসতে লাগবে? (তা হচ্ছে) তোমরা আপোসের মধ্যে সালাম প্রচার কর।’ -(মুসলিম, হাদিস : ৫৪; তিরমিজি, হাদিস : ২৬৮৮; আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৯৩; ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৬৯২; আহমাদ, হাদিস : ৮৮৪১)

সালামের মাধ্যমে পরস্পরের মাঝে সৌর্হাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। ইসলামী শরীয়তে সালাম দেওয়া সুন্নত। সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব।

চলাফেরার পথে প্রত্যেক মুসলমানই অপরকে সালাম দিয়ে থাকেন। অপরজনও হাসি মুখেই সালামের উত্তর দিয়ে থাকেন। তবে কোরআন তেলাওয়াত করার সময় কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া জরুরি কিনা?- অথবা এমতাবস্থায় কী করণীয়?

ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতে, কোরআন তেলাওয়াতে লিপ্ত ব্যক্তিকে ইচ্ছা করে সালাম দেওয়া ঠিক নয়। কারণ, কোরআন তেলাওয়াত স্বতন্ত্র একটি ইবাদাত। তবুও কেউ তেলাওয়াতরত ব্যক্তিকে সালাম দিলে তেলাওয়াত বন্ধ করে তার উত্তর দেওয়া জরুরি বা আবশ্যক নয়।

তবে উত্তর দিতে চাইলে কোরআনের আয়াত পূর্ণ করে ওয়াফকের জায়গায় থেমে তারপর সালামের উত্তর দেবে। (তাবয়িনুল হাকায়েক : ১/৩৯৫; আলবাহরুর রায়েক : ২/৯; রদ্দুল মুহতার : ১/৬১৭-৬১৮, ৬/৪১৫)

এনটি