প্রতীকী ছবি

মানুষের সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত কাজ-কর্ম, ব্যস্ততা। কাজে দক্ষ-কর্মঠ ব্যক্তিরাই জীবনে সফল হয়, সব জায়গায় মূল্যায়িত হয়। কর্মঠ মানুষেরা নিজেকে আরো বেশি যোগ্য ও সফল করে তোলার চেষ্টা করেন। এজন্য বিভিন্ন পথ-পদ্ধতি অবলম্বন করেন। সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছতে অভিজ্ঞদের দ্বারস্থ হন, পরামর্শ নিয়ে কাজ করেন। পবিত্র কোরআনেও কাজ শুরুর আগে পরামর্শের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কোরআনে পরামর্শের গুরুত্ব

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যারা তাদের রবের নির্দেশ মেনে চলে, নামাজ কায়েম করে এবং নিজেদের সব কাজ পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে চালায়, আমি তাদের যা রিজিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করে।’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত-৩৮)

অর্থাৎ, ঈমানদারদের প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের বিষয়ে পরস্পরের মাঝে পরামর্শ করার কথা বলা হয়েছে। এবং বলা হয়েছে, কেউ যেন নিজের মতকেই শেষ মত না ভাবে। 

ইসলামে পরামর্শের বিষয়টিকে এতোটাই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে আল্লাহ তায়ালা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও পরামর্শের কথা বলেছেন, বর্ণিত হয়েছে, কাজে কর্মে মুসলিমদের সাথে পরামর্শ কর। -(সূরা আলে-ইমরান ১৫৯) 

নবীজি (সা.) নিজেও পরামর্শ করতেন

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও যেকোনও কাজের ক্ষেত্রে পরামর্শ করার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে বেশি পরামর্শকারী অন্য কাউকে দেখিনি। -(সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪৮৭২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘নিজের একক সিদ্ধান্তে কেউ সফল হয়নি আর পরামর্শ করে কেউ কখনো বিফল হয়নি।—(জামে সগীর : ২/৩১)

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত মুআয ইবনে জাবাল রাযি.—কে ইয়ামানের বিচারক করে পাঠানোর সময় এ উপদেশ দিয়েছিলেন, ‘পরামর্শ করে কাজ করবে। কারণ, পরামর্শকারী (আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে) সাহায্যপ্রাপ্ত হয় আর যার পরামর্শ গ্রহণ করা হয় সে এ ব্যাপারে যিম্মাদার।—(জামেউল আহাদীস : ৯/২০, হাদীস নং : ৮৮৪০)

 

পরামর্শের মাধ্যমে যে উপকার হয়

পরামর্শ করে কাজের মাধ্যমে পরস্পরের মাধ্যমে ভালোবাসা তৈরি হয়। এতে অনেকের কাছ থেকে বিভিন্নমুখী ধারনা পাওয়া যায়। কেউ কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে সহজেই একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, এতে কাজ করা সহজ হয়।

যার কাছে পরামর্শ চাইবেন

তবে পরামর্শ করার আগে যার সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন তিনি বিশ্বস্ত, আমানতদার, নেককার ও দ্বীনদার ব্যক্তি কিনা তা যাচাই করে নেওয়া জরুরি। কারণ, যে কারও কাছে পরামর্শ চাইলে হিতে-বিপরীত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এজন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,‘যার কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়, সে আমানতদার।’ (ইবন মাজাহ ৩৭৪৫) অর্থাৎ সে আমানতের সাথে পরামর্শ দিবে, ভুল পথে চালাবে না এবং আমানত হিসেবেই সেটা তার কাছে রাখবে।

এনটি