একই ব্যক্তি ইকামত দিয়ে নামাজ পড়াতে পারবেন?
নামাজ ইসলামের ফরজ বিধান। কেয়ামতের দিন নামাজের হিসাব না দিয়ে কেউ সামনে অগ্রসর হতে পারবে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বান্দাকে যে বিষয়ে সর্বপ্রথম জবাবদিহি করতে হবে তা হলো নামাজ। -(সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৪৬৭)
নামাজ আদায়ের জন্য আজান দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের কাছাকাছি। এর পাশাপাশি জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য একামত দেওয়া সুন্নত। এছাড়াও আজান ও একামতের বিধানগুলো ইসলামের অন্যতম নিদর্শন বহন করে। এজন্য ফরজ নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে আজান ও একামতের গুরুত্ব অপরিসীম।
বিজ্ঞাপন
আমাদের সমাজে সাধারণত মসজিদে আজান দেওয়ার জন্য ও নামাজ পড়ানোর জন্য আলাদা আলাদা ইমাম ও মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করা থাকে। মুয়াজ্জিন একই সাথে আজান ও ইকামত দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন। মুয়াজ্জিনের ইকামত দেওয়া শেষ হলেই ইমাম নামাজ পড়ানো শুরু করেন। কিন্তু মসজিদের নির্ধারিত মুয়াজ্জিন না থাকলে অথবা কোনও কারণে মুয়াজ্জিন না থাকলে একই ব্যক্তি আজান-ইকামত উভয়টি বলে ইমামতি করতে পারবেন কিনা?- এমন প্রশ্ন করেন অনেকে।
এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, কোনও কারণে ইকামত দেওয়ার জন্য মুয়াজ্জিন বা অন্য কেউ না থাকলে ইমাম বা একই ব্যক্তি আজান-ইকামত দেওয়ার নামাজের ইমামতি করতে পারবেন। এতে কোনো অসুবিধা হবে না। তবে এলাকাবাসীর কর্তব্য হচ্ছে এ জন্য পৃথক লোক নির্ধারণ করা।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে হজরত বিলাল (রা.) আজান দিয়েছেন এবং হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রা.) ইকামত দিয়েছেন। -(আবু দাউদ : ৫১২)
হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও ইকামত দিয়ে নিজেই ইমামতি করার প্রমাণ পাওয়া যায়। হজরত উকবা ইবনে আমের জুহানি (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। পথিমধ্যে রাত যাপনের পর যখন ফজর উদয় হলো তখন তিনি আজান দিলেন এবং ইকামত দিলেন। অতঃপর আমাকে তার ডান পাশে দাঁড় করিয়ে তিনি নামাজে ইমামতি করলেন।
(মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ৩৭০৮; ফাতহুল কাদির : ১/২২৩; ফাতাওয়া খানিয়া : ১/৭৯; আলবাহরুর রায়েক : ১/২৫৭; বাদায়েউস সানায়ে : ১/৩৭৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৫০; আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩৯৫)
এনটি