প্রতীকী ছবি

কবর জিয়ারত করলে হৃদয় বিনম্র হয়। মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। আখিরাতের প্রতি উৎসাহ পাওয়া যায়। গুনাহ ও অন্যায় থেকে তওবা করার মানসিকতা তৈরি হয়। সৎ-আমলের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। কবর জিয়ারত রাসুল (সা.) সুন্নতও বটে।

কবর জিয়ারতের অনুমতি দেওয়ার অন্যতম কারণ হলো- এতে পরকালীন জীবনের কথা স্মরণ হয়। ইসলামের প্রথম দিকে কবর জিয়ারতের অনুমতি ছিল না। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের কবর জিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে কবর জিয়ারত করো। কারণ, তা দুনিয়াবিমুখতা এনে দেয় এবং আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’=(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৭১)

কেউ কবর জিয়ারত করতে অথবা অন্য কোনও কারণে জুতা পায়ে কবরস্থানে প্রবেশ করলে তা ঠিক হবে কিনা অথবা এর কারণে কি গুনাহ হবে?

এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, বিনা প্রয়োজনে কবরের ওপর দিয়ে হাঁটা-চলা করা উচিত নয়। তবে প্রয়োজনে অবশ্যই যাওয়া যাবে, এক্ষেত্রে আলেমদের মতামত হলো, প্রয়োজন ছাড়া কবরস্থানে জুতা পরিধান করা সুন্নাতের পরিপন্থী এবং ময়লা-আবর্জনা না থাকলে পারতপক্ষে জুতা খুলে প্রবেশ করাই উত্তম। 

তবে জুতা পায়ে কবরস্থানে গেলে কোনও সমস্যা নেই, এটা নাজায়েয নয়, এর কারণে কোনও গুনাহও হবে না। 

-(হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাদ্দুর ১/২৮৩, আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪১ রদ্দুল মুহতার ২/২৪৫, ইবনু কুদামা, মুগনী ২/২২৪; ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ৩/২০৬; শাওকানী, নায়লুল আওত্বার ৪/১০৭; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৯/১২৩-১২৪; উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৭/২০২)

যেভাবে কবর জিয়ারত করবেন

কবরস্থানে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম জিয়ারতের দোয়া পড়বেন। এরপর কবরবাসীর ইসালে সওয়াবের নিয়তে দরুদ শরিফ ও বিভিন্ন সুরা ইত্যাদি পড়বেন। মৃতের বা কবরবাসীর মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন।

হাদিসে কবর জিয়ারতের ক্ষেত্রে কিছু সুরার বিশেষ ফজিলতের কথা উল্লেখ হয়েছে। পাশাপাশি দরুদ শরিফের ফজিলতের কথাও এসেছে। তাই দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসি ও অন্য যেসব সুরা সহজ মনে হয়— সেগুলো পড়ে সওয়াব উপহার দেবেন।

কবর সামনে রেখে দুই হাত তুলে দোয়া উচিত নয়। তাই কবরকে পেছনে রেখে কিংবা কবরের দিকে পিঠ দিয়ে এরপর কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা চাই। আবার কেউ চাইলে হাত না তুলে মনে মনেও দোয়া করতে পারেন। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৫০, কিতাবুল কারাহিয়্যা)