পৃথিবীর জীবন শেষে শুরু হবে এক অনন্ত অধ্যায়। যা কখনো শেষ হবার নয়। এর প্রথমধাপ মৃত্যু। যে ব্যক্তির মৃত্যুর সময় আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমান রাখবে, মুখে কালিমা উচ্চারণ করবে তার অনন্ত জীবন হবে সুখের, চিরস্থায়ী জান্নাত হবে তার আবাস্থল। 

হজরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) বলেন, একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের বলেন, যার সর্বশেষ বাক্য হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। -(আবু দাউদ, হাদিস : ৩১১৬)

মৃত্যুর সময় মানুষ সহজেই কালিমা পড়ার সৌভাগ্য লাভ করতে পারার মত যেসব আমলের কথা জানিয়েছেন আল্লাহর রাসুল। তার একটি মিসওয়াক করা। আল্লামা ইবনে আবেদিন রহ. বলেছেন, ‘মিসওয়াকের উপকারিতা সত্তরেরও অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপকার হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় আর সর্বোচ্চ উপকার হচ্ছে মিসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হয়।’-(ফাতাওয়ে শামি : ১/২৩৯)

রাসুল (সা.) মিসওয়াকের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। মৃত্যুর সময়ও তিনি এই আমল ছাড়েননি। একেবারে অন্তিম সময়ে যখন তিনি মিসওয়াক করতে পারছিলেন না তখন হজরত আয়েশা (রা.) নিজ থেকে মিসওয়াক চিবিয়ে রাসুল (সা.)-এর মুখে তুলে দিচ্ছিলেন। আর রাসুল (সা.) তা দিয়ে মিসওয়াক করেছিলেন।

‘মিসওয়াকের উপকারিতা সত্তরেরও অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপকার হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় আর সর্বোচ্চ উপকার হচ্ছে মিসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হয়।

মিসওয়াক করা আল্লাহর রাসুলের অত্যন্ত পছন্দনীয় কাজ। তিনি বলেছেন, যখনই জিবরাইল (আ.) আমার কাছে আসতেন, তখনই আমাকে মিসওয়াকের নির্দেশ দিতেন। এতে আমি আশঙ্কাবোধ করলাম যে (মিসওয়াক করে) আমি আমার মুখের সম্মুখ দিক ক্ষয় করে দেব।- (মুসনাদ আহমদ, হাদিস : ২২২৬৯)

উম্মতের জন্য তিনি এই আমলটি আবশ্যকীয় করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শুধু কষ্টের কথা চিন্তা করে তা করেননি। এ সম্পর্কে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যদি আমি আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তবে অবশ্যই প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।’-(মিশকাত : ৩৪৬)

মহানবী (সা.) আরও বলেছেন, নবী-রাসুলদের সুন্নত হলো চারটি। যথা—১. লজ্জা করা, অন্য বর্ণনায় খতনা করা, ২. সুগন্ধি ব্যবহার করা, ৩. মিসওয়াক করা, ৪. বিয়ে করা, (তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫১)

আরেক হাদিসে মিসওয়াক করাকে আল্লাহর রাসুলের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম বলা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, মিসওয়াক হলো মুখ পরিষ্কার করার উপকরণ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায়। -(আহমদ, নাসায়ি, মিশকাত, ৩৫০)

এনটি