মানুষ যত আমল করে সবের মুলে থাকে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের প্রত্যাশা। যার প্রতি আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হবেন, তার সবকিছুই অর্জিত হবে অনায়াসে। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন আমলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এমন কিছু আমল হলো-

আল্লাহর সন্তুষ্টির আকাঙ্খা

নামাজ, রোজা, জিকির-আজকার ও গুনাহ পরিত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করা। এতে আল্লাহ তায়ালা বান্দার ওপর সন্তুষ্ট হন। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, বান্দা যদি সর্বদা তার রবের সন্তুষ্টির আকাঙ্খা করতে থাকে। এক সময় আল্লাহ তায়ালা জিব্রাইল (আ.)-কে বলে দেন, অমুক বান্দা আমার সন্তুষ্টি পেতে উৎসুক, তাই তাকে আমি আমার দয়ার চাদরে ঢেকে নিলাম-(মুসনাদে আহমদ ২২৪৫৪)

বিপদাপদে ধৈর্য ও আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট থাকা

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, বিপদ যত মারাত্মক হবে প্রতিদান তত মহান হবে। আল্লাহ তায়ালা যখন কোনও জাতিকে ভালোবাসেন, তখন বিভিন্ন বালা-মুসিবত দিয়ে তাদের পরীক্ষা করেন। সুতরাং যারা এর ওপর সন্তুষ্ট থাকে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর যারা এর ওপর অসন্তুষ্ট থাকে তাদের জন্য রয়েছে মহান রবের অসন্তুষ্টি। (সুনানে তিরমিজি : ২৩৯৬)

হজরত মুসআব ইবনু সাদ রহ: হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত, তিনি (সাদ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মাঝে কার বিপদের পরীক্ষা সবচেয়ে কঠিন হয়? তিনি বললেন : নবীদের বিপদের পরীক্ষা, তার পর যারা নেককার তাদের, এরপর যারা নেককার তাদের বিপদের পরীক্ষা। 

মানুষকে তার ধর্মানুরাগের অনুপাত অনুসারে পরীক্ষা করা হয়। তুলনামূলক যে লোক বেশি ধার্মিক তার পরীক্ষাও সে অনুপাতে কঠিন হয়ে থাকে। আর যদি কেউ তার দ্বীনের ক্ষেত্রে শিথিল হয়ে থাকে তা হলে তাকে সে মোতাবেক পরীক্ষা করা হয়। অতএব, বান্দার ওপর বিপদাপদ লেগেই থাকে, অবশেষে তা তাকে এমন অবস্থায় ছেড়ে দেয় যে, সে জমিনে চলাফেরা করে অথচ তার কোনো গুনাহই থাকে না। -(ইবনু মাজাহ ৪০২৩)

আল্লাহর জিকির

হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আমি কি তোমাদেরকে অধিক উত্তম কাজ সম্পর্কে জানাব না, যা তোমাদের মালিকের কাছে সবচেয়ে পবিত্র, তোমাদের সম্মানের দিক থেকে সবচেয়ে উঁচু, সোনা-রূপা, দান-সদকা করার চেয়েও বেশি ভালো এবং তোমাদের শত্রুর মোকাবিলায় অবতীর্ণ হয়ে তাদেরকে তোমাদের নিধন করা ও তোমাদেরকে তাদের নিধন করার চেয়েও উত্তম? তারা বললেন, হ্যাঁ! তিনি বললেন, তা হলো আল্লাহ তায়ালার জিকির। -(সুনানে তিরমিজি : ৩৩৭৭)

মিসওয়াক করা

মিসওয়াক করার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মিসওয়াক হলো মুখের পবিত্রতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম। -(সুনানে নাসায়ি : ৫)

আল্লামা ইবন আবেদিন বলেছেন, মিসওয়াকে রয়েছে ৭০টির ঊর্ধ্বে উপকারিতা। তিনি বলেন, ‘মিসওয়াকের উপকারিতা সত্তরেরও অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপকার হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় আর সর্বোচ্চ উপকার হচ্ছে মিসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হয়।’ -(ফাতাওয়ে শামি : ১/২৩৯)

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, ‘মহানবী (সা.) রাতে বা দিনে যখনই ঘুম থেকে উঠতেন তখনই অজু করার আগে মিসওয়াক করতেন।’ -(আহমদ, আবু দাউদ, মিশকাত, হাদিস নং ৩৫২)

এনটি