প্রতীকী ছবি

মুমিনের জীবনের অন্যতম উদ্দেশ আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও পরকালের পাথেয় অর্জন। এবং আল্লাহ তায়ালার হুকুম অমান্য করলে যে শাস্তির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে নিজেকে তা থেকে রক্ষা করা। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, অপরদিকে মানুষের মধ্যে কেউ এমনও আছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের জীবন বিক্রি করে দেয় এবং এমন বান্দাদের ওপর আল্লাহ বড়ই মেহেরবান।’ (সুরা আনআম, আয়াত-৭৯) 

তবে মানুষ অনেক সময় নিজের অজান্তেই এমন কিছু কাজ করে ফেলে যা তাকে আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টি ও পরকালের শাস্তির দিকে নিয়ে যায়। এমন একটি কাজ হলো, অনিয়ন্ত্রিত ও অনর্থক কথা-বার্তা।

এ বিষয়ে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দা কখনো কখনো আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক এমন কথা বলে, যার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তার সম্মান বৃদ্ধি করে দেন। আবার কখনো কখনো বান্দা আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক এমন কথা বলে, যার পরিণতি সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই, অথচ ওই কথার কারণে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।’ -(বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬৪৭৮)

তাই জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করা প্রতিটি মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জিহ্বার অপব্যহারের কারণে জীবনে নেমে আসে হাজারো বিপদ ও দুর্ভোগ। অযথা জিহ্বার ব্যবহার থেকে বিরত থাকায় পাপ থেকে মুক্তি মেলে। যত কম কথা বলা যায় ততই কল্যাণকর। 

ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, যে নীরবতা অবলম্বন করে সে মুক্তি পায়। -(তিরমিজি, হাদিস নম্বর : ২৪৮৫)

এছাড়া চুপ থাকা মহানবী (সা.)-এর অন্যতম গুণ। তিনি দীর্ঘক্ষণ নীরবতা অবলম্বন করতেন। প্রয়োজন ছাড়া কোনও কথা বলতেন না। 

একদা সিমাক (রহ.) জাবের ইবনে সামুরা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি রাসুল (সা.)-এর সাহচর্যে ছিলেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। রাসুল (সা.) অধিকাংশ সময় নীরব থাকতেন। খুব কম হাসতেন...।’ (আহমদ, হাদিস : ৬৩০৮ )

জিহ্বার অপব্যবহারের ফলে অনেক অপরাধ ও গুনাহর দ্বার খুলে যায়। গালমন্দ, গিবত, পরনিন্দা ও মিথ্যা বলা সবই জিহ্বার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। হাদিসের ভাষ্য মতে এ সব কিছু জাহান্নামের পথকে সুগম করে দেয়।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, ‘কোন কাজটি বেশি পরিমাণে মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, আল্লাহভীতি, ভালো আচরণ ও উত্তম চরিত্র। রাসুল (সা.)-কে আবার প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজ বেশি পরিমাণে মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন মুখ ও লজ্জাস্থান।’ -(তিরমিজি, হাদিস : ২০০৪)

আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখেরাতের ওপর ঈমান আনে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখেরাতের ওপর ঈমান আনে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখেরাতের ওপর ঈমান আনে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা নীরবতা অবলম্বন করে।’ (বুখারি: ৬১২০)

এনটি