সুন্নত না পড়ে কাজা নামাজ আদায় করা যাবে?
মুসলমানদের ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। মানুষ যেখানে থাকুক না কেন— সময়মতো নামাজ আদায় করতেই হয়। এই ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, ‘নামাজ মুমিনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১০৩)
ইচ্ছাকৃত নামাজ ছাড়লে গুনাহ
বিজ্ঞাপন
তাই কোনো ধরনের ওজর বা অপারগতা ছাড়া কোনো নামাজ সময় চলে যাওয়ার পর আদায় করা— জায়েজ নেই। কেউ ইচ্ছাকৃত সময়মতো নামাজ আদায় না করলে, তাকে গুনাহগার হতে হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৯৬)
কাজা নামাজ
নিতান্ত ভুলবশত, অপারগ হয়ে কিংবা অতি বিশেষ কারণে কোনো ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে না পারলে— পরবর্তী সময়ে এই নামাজ আদায় করে দিতে হয়। আর এই নামাজ আদায়কে কাজা নামাজ বলা হয়। ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে, সে নামাজের কাজা আদায় করা আবশ্যক। সুন্নত কিংবা নফল নামাজ আদায় করা না গেলে, সেটার কাজা আদায় করতে হয় না।
সুন্নত না পড়ে কাজা আদায়ের বিধান
কারো ওপর যদি অনেক ফরজ নামাজের কাজা থাকে এবং তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে যেসব সুন্নত আছে সেগুলোর পরিবর্তে কাজা নামাজ আদায় করেন তাহলে এটা ঠিক হবে কিনা? অথবা এর কারণে আলাদা কোনও গুনাহ হবে কি?
এক্ষেত্রে ফেকাহবিদ আলেমরা বলেন, কাজা নামাজ আদায়ের জন্য লাগাতার সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়া জায়েজ নেই। কারণ, সুন্নত মুয়াক্কাদা আদায় করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাই ধারাবাহিকভাবে এমন করলে এর কারণে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে। এজন্য ফরজ নামাজের কাজা আদায়ের জন্য সুন্নত নামাজ ছাড়া উচিত নয়। -(দুররুল মুহতার, ২/৭২, দারুল কুতুব আল ইলমিইয়্যাহ, ৪৪৭)
নামাজ ছেড়ে দিলে যে হুঁশিয়ারি
তবে সবসময় ঠিকমতো নামাজ আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ কোনও কারণ ছাড়া ফরজ নামাজ কাজা করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো ব্যক্তি এবং কুফর ও শিরকের মধ্যে ব্যবধান শুধু নামাজ না পড়ারই। যে নামাজ ছেড়ে দিল সে কাফির হয়ে গেল (কাফিরের মতো কাজ করল)। ’-(মুসলিম, হাদিস : ৮২; তিরমিজি, হাদিস : ২৬১৯)
এছাড়াও ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ছেড়ে দিলে মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর থেকে তাঁর জিম্মাদারি বা রক্ষণাবেক্ষণ তুলে নেন। মুআজ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাকে দশটি নসিহত করেন, তার মধ্যে বিশেষ একটি এটাও যে তুমি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করো না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করল তার ওপর আল্লাহ তাআলার কোনো জিম্মাদারি থাকল না। ’ -(মুসনাদ আহমাদ : ৫/২৩৮)
এনটি