নামাজে ভুলে কোনো ওয়াজিব ছেড়ে দিলে— সিজদায়ে সাহু দিতে হয়। শুধু দিতে হয় না— তখন সিজদায়ে সাহু দেওয়া ওয়াজিব। মূলত ওয়াজিব ছুটে যাওয়াটাই সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হওয়ার কারণ।

এ বিষয়ে হজরত আবদুল্লাহ ইবনু বুহায়নাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনও এক নামাজে আল্লাহর রাসুল (সা.) দু্ই রাকাত আদায় করে— না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। মুসল্লিরাও তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলেন। যখন তার সালাত সমাপ্ত করার সময় হলো এবং আমরা তার সালাম ফেরানোর অপেক্ষা করছিলাম, তখন তিনি সালাম ফেরানোর আগে তাকবির বলে বসে বসেই দুইটি সিজদা করলেন। অতঃপর সালাম ফেরালেন। (বুখারি, হাদিস : ৮২৯; মুসলিম, ৫/১৯, হাদিস : ৫৭০; আহমাদ, হাদিস : ২২৯৮১)

আবদুল্লাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসুল (সা.) জোহরের পাঁচ রাকাত আদায় করলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, নামাজ কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেন, এ প্রশ্ন কেন? (প্রশ্নকারী) বললেন, আপনি তো পাঁচ রাকাত আদায় করেছেন। অতএব তিনি সালাম ফেরানোর পর দুইটি সিজদা করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৪০১)

সাধারণত আমরা নামাজ পড়তে গিয়ে একটি ভুল করলে তার পরিবর্তে একটি সাহু সিজদা বা ভুলের সিজদা দেই; কিন্তু কেউ নামাজ পড়তে গিয়ে একাধিক ভুল করে ফেললে তিনি কি একটা সিজদা আদায় করবেন নাকি একাধিক ভুলের জন্য ভুল সমপরিমাণ সিজদা দিবেন- বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে এমন প্রশ্ন জাগতে পারে স্বাভাবিকভাবে।

এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরাম বলে থাকেন, এক নামাজে একাধিক ওয়াজিব ছুটে গেলেও একবার সাহু সেজদা আদায় করাই যথেষ্ট। প্রত্যেক ভুলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সাহু সেজদা করতে হয় না।তবে নামাজে মনোযোগী হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে তাগিদ এসেছে। মনোযোগের সঙ্গে নামাজ আদায় করলে একই নামাজে বারবার ভুল হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। -(বাদায়েউস সানায়ে : ১/৪১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৩০; আদ্দুররুল মুখতার : ২/৮০) 

সাহু সিজদা যেভাবে দেবেন

সাহু সিজদার সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে— সাহু সিজদা যার ওপর ওয়াজিব হয়েছে, সে শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ে ডান দিকে এক সালাম ফেরাবে। এরপর তাকবির বলে নামাজের মতো দুইটি সিজদা করে বসে যাবে এবং তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাবে। সালামের আগে সিজদা করলে নামাজ হয়ে যাবে। তবে তা মাকরুহে তানজিহি। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৮১৮৮; বুখারি, হাদিস : ১১৫০-১১৫৩; তিরমিজি, হাদিস : ৩৬১)

এনটি