জনসাধারণের প্রতি যে ১০ উপদেশ দিয়েছেন আবু বকর রা.
ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা.। আল্লাহর রাসূলের ওফাতের পর তার নেতৃত্ব শোকে কাতর সাহাবায়ে কেরামের শক্তি জুগিয়েছে। মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য বজায় রেখেছে। খেলাফত লাভের পর বিভিন্ন সময় তিনি জনসাধারণকে উদ্দেশ করে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছেন।
তার দেওয়া উপদেশের মধ্য থেকে ১০টি তুলে ধরা হলো এখানে-
বিজ্ঞাপন
১. সবচেয়ে বিচক্ষণতার পরিচয় হলো তাকওয়া অবলম্বন করা। সবচেয়ে নির্বুদ্ধিতার পরিচয় হলো গুনাহের কাজ করা। সবচেয়ে সত্যবাদিতার পরিচয় হলো আমানত রক্ষা কর। সবচেয়ে জগণ্য মিথ্যা হলো, খেয়ানত করা।
২. যখন মানুষ দুনিয়ার কোনও বিষয়ের ওপর আসক্ত হয়ে পড়ে, তখন আল্লাহ তায়ালা তার ওপর অসন্তুষ্ট হন। যখন সে এই কাজ বা বিষয় থেকে দূরে সরে আসে তখন আল্লাহ তায়ালা তার ওপর সন্তুষ্ট হন।
৩. হজরত আবু বকর রা. কোনও সন্দেহযুক্ত খাবার খেয়ে ফেললে যাচাই—বাছাইয়ের পর তা বমি করে ফেলে দিতেন। এরপর দোয়া করে বলতেন, হে আল্লাহ! এই খাবারের যে প্রভাব আমার পেটের রগে—রন্ধে চলে গিয়েছে, তার জন্য আমাকে পাকড়াও করো না।
৪. তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা গোলাম—বাদীদেরকে নিজের সন্তানদের মতো করে রাখো। তোমরা যা খাও, তাদেরকেও তা খেতে দাও। তোমরা যেমন কাপড় পরিধান করো, তাদেরকেও তেমন কাপড় পরিধান করাও।
৫. তিনি আফসোস করে বলতেন, যদি আমি মানুষ না হয়ে কোনও গাছ হতাম, যা কেটে ফেলা হতো। এবং খেয়ে ফেলা হতো।
৬. তিনি জিহ্বাকে টেনে ধরে বলতেন, এটিই আমাকে ধ্বংসের স্থানে উপনীত করেছে।
৭. এক ভাষণে তিনি বলেন, সুন্দর ও ফর্সা মানুষগুলো এখন কোথায়? নিজের সৌন্দর্যতার ওপর যাদের অহমিকা ছিলো? যেসব রাজা—বাদশারা শহর তৈরি করেছিলো, দূর্গ প্রস্তুত করেছিলো, তারা এখন কোথায়? বীর—বাহাদুররা কোথায়? যারা যুদ্ধের ময়দানে সবসময় বিজয়ী হতো? যুগ তাদেরকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। তারাও অন্ধকার কবরে নিথর হয়ে পড়ে আছে।
৮. তিনি বলতেন, সাবধান! কেউ যেন কাউকে তুচ্ছ মনে না করে। কারণ, ছোট স্তরের মুসলমানও আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক বড়।
৯. তার উটের নকীল যখন গলা থেকে পড়ে যেতো, তিনি নিজেই উটকে বসিয়ে তা গলায় পড়িয়ে নিতেন। লোকেরা বললো, হজরত! আপনি আমাদেরকে কেন এই কাজটি করতে আদেশ করেন না। উত্তরে তিনি বলেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন, আমরা যেনো কোন বিষয়ে কারো কাছে সাহায্য না চাই।
১০. তিনি বলতেন, আমরা তাকওয়ার মধ্যে বুজুর্গী পেয়েছি, বিশ্বাসের মধ্যে অমুখাপেক্ষীতা পেয়েছি। বিনয়ের মধ্যে মান—সম্মান পেয়েছি।
সূত্র : মাওয়ায়িজে সাহাবা
এনটি