হাজার বছর আগে ইসলাম শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করেছে। মালিকের জুলুম থেকে রক্ষা করে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। মালিক ও শ্রমিকের দায়িত্ব কর্তব্যের বিষয়ে বিভিন্ন হাদিসে বিশদ বর্ণনা রয়েছে। দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের অবহেলা না করার প্রতি গুরুত্ব ‍দিয়েছে ইসলাম। শ্রমিক ও মালিকের মাঝে উঁচু-নিচু শ্রেণী বলতে কিছু নেই ইসলাম এ শিক্ষাই দিয়েছে।

ইসলামই সমাজে এ কথা বাস্তবায়ন করেছে যে আল্লাহ তায়ালার বান্দা হিসেবে সবাই সমান, কোনো ভেদাভেদ নেই। বিদায় হজের ভাষণে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে মানবসকল! তোমাদের পালনকর্তা এক আল্লাহ। তোমাদের আদি পিতা এক আদম আলাইহিস সালাম। মনে রেখো! অনারবের ওপর আরবের ও আরবের ওপর অনারবের এবং শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণাঙ্গের ও কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গের কোনোই বিশেষত্ব বা শ্রেষ্ঠত্ব নেই। শুধু আল্লাহভীতি ও ধর্মপালনের দিক দিয়েই এ বিশেষত্ব বিবেচিত হতে পারে।’ - (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ২২৯৭৮)

শ্রমিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মালিকের ওপরই অর্পন করেছে ইসলাম। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মালিকানাধীন (অধীন) ব্যক্তির জন্য খাবার ও কাপড়ের অধিকার রয়েছে। -(মুসলিম, হাদিস : ১৬৬২)

এসবের পাশাপাশি ইসলাম শ্রমিকদের বেতন ও পারিশ্রমিক দ্রুততম সময়ে আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ঘাম শুকানোর আগেই শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিয়ে দাও। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪৪৩০)

অন্য হাদিসে পারিশ্রমিক ও প্রাপ্য অধিকার নিয়ে টালবাহানাকে অবিচার আখ্যায়িত করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ধনী ব্যক্তির টালবাহানা অবিচার। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২২৮৭); অর্থাৎ সামর্থ্য থাকার পরও মানুষের প্রাপ্য ও অধিকার প্রদানে টালবাহানা করা বড় অন্যায়।

ঠুনকো অজুহাতে বেতন-ভাতা ও প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ভয়ংকর অপরাধ। মহানবী (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির বিপক্ষে থাকব। ... আর একজন সে যে কাউকে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার পর তা থেকে কাজ বুঝে নিয়েছে অথচ তার প্রাপ্য দেয়নি। (বুখারি, হাদিস : ২২২৭)

এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, ‘যে জাতির দুর্বল লোকেরা জোরজবরদস্তি ছাড়া তাদের পাওনা আদায় করতে পারে না, সেই জাতি কখনো পবিত্র হতে পারে না। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪২৬)

এনটি