ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। এ ধর্মে শুধু আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর ইবাদত-বন্দেগির কথাই বলা হয়নি। বরং নামাজ আদায়ের পর জীবিকা নির্বাহের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নামাজ যখন সম্পন্ন হয়, তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো। ’ (সুরা জুমা : ১০) 

জীবিকা উপার্জনে মানুষ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। কেউ নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আবার অনেকে অফিস-আদালতে চাকরি করে থাকেন। যেহেতু জীবিকা উপার্জন আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ এবং নামাজও তাঁর দেওয়া ফরজ বিধান। তাই কারও কর্মস্থল নিজের বাড়ি থেকে দূরে হলে তিনি কতটা পথ পাড়ি দিলে মুসাফিরের জন্য নির্ধারিত কসর নামাজ আদায় করবেন এবং যাওয়া আসার রাস্তায় কসর পড়বেন কিনা - এমন প্রশ্ন থেকেই যায় অনেকের মনে।

এ বিষয় ফেকাহবিদ আলেমদের মতামত হলো, কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে নিজ শহর বা গ্রাম পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। -(জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬) 

মুসাফির ব্যক্তি চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত (কসর) পড়বেন। এই সংক্ষেপে আল্লাহপ্রদত্ত কল্যাণ রয়েছে।  কোরআনে বলা হয়েছে— ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০১)

তাই কর্মস্থল নিজের বাড়ি থেকে সফর পরিমাণ দূরত্বে (৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার) হলে সেখানে যাতায়াতের সময় বাসস্থানের এলাকা ত্যাগ করার পর পথিমধ্যে মুসাফির গণ্য হবে এবং নামাজ কসর করবে। 

আর চাকরিস্থলে ১৫ দিনের নিয়তে কখনও থাকা না হলে সেখানেও মুসাফির থাকবে এবং নামাজ কসর (সংক্ষেপ) করবে। অবশ্য চাকরিস্থলে যদি কখনও ১৫ দিনের নিয়তে অবস্থান করে থাকে, তাহলে এমন ব্যক্তি চাকরিস্থলে মুকিম। তখন চাকরিস্থলে কসর করতে পারবে না, তবে যাতায়াতকালে রাস্তায় কসর করতে পারবে। (ফাতহুল কাদির : ২/৮; আলবাহরুর রায়েক : ২/১২৮; আদ্দুররুল মুখতার : ২/১২১)

এনটি