আলহামদুলিল্লাহ শব্দের অর্থ সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যেকোনো উত্তম, আনন্দ ও সুখবরে ভালো কিছুর জন্য এটি বলা হয়ে থাকে। পছন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলতে হয়—‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি বিনিয়মাতিহি তাতিম্মুস সালিহাত।’ অর্থ : সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর, যার করুণায় উত্তম কাজ সম্পন্ন হয়।

আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরিফের সূরা ফাতিহা, সূরা আনআম, সূরা কাহাফ, সূরা সাবা ও সূরা ফাতির ‘আলহামদুলিল্লাহ’ শব্দের মাধ্যমে শুরু করেছেন। এছাড়াও কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আলহামদুলিল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। 

আলহামদুলিল্লাহ শব্দটি আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা এবং শুকরিয়ার অর্থ বহন করে। এবং এটা সর্বোত্তম দোয়া। হাদিসে এসেছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ সর্বোত্তম ফজিলতপূর্ণ বাক্য এবং সর্বোত্তম দোয়া হলো আলহামদুলিল্লাহ।

হামদ অর্থ, পরিপূর্ণ প্রশংসা। আল্লাহ তায়ালা সব ধরনের প্রশংসারযোগ্য। আল্লাহ তায়ালার মাহাত্ম্য বর্ণনা ও প্রশংসার জন্য আলহামদুলিল্লাহর থেকে উত্তম বাক্য আর নেই। (তিরমিজি, নাসাঈ)

এক হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা সব থেকে বেশি নিজের প্রশংসা পছন্দ করেন, এজন্য তিনি নিজের প্রশংসা করেছেন, এবং আমাদেরও (আলহামদুলিল্লাহ জাতীয় বাক্যে) তাঁর প্রশংসার নির্দেশ দিয়েছেন। ( বুখারি, ২/১৮১৭)

আলহামদুলিল্লাহ শব্দটি আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা এবং শুকরিয়ার অর্থ বহন করে। এবং এটা সর্বোত্তম দোয়া। হাদিসে এসেছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ সর্বোত্তম ফজিলতপূর্ণ বাক্য এবং সর্বোত্তম দোয়া হলো আলহামদুলিল্লাহ। ( তিরমিজি, ৩৩৮৩)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, আলহামদুলিল্লাহ মিজানকে পূর্ণ করে দেয়। আর সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ শব্দ দুটি আসমান ও জমিনের খালি জায়গা পূর্ণ করে দেয়। (মুসলিম. ২২৩)

আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো বান্দাকে নেয়ামত দান করেন এবং সে এতে আলহামদুলিল্লাহ বলে, তাহলে সেই বান্দা আল্লাহ তায়ালাকে যেই জিনিস দিলো (আলহামদুলিল্লাহ বলে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায়) তা ওই জিনিস থেকে উত্তম যা সে নিয়েছে (আল্লাহর নেয়মত)। 

হাদিসে আরো এসেছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি আমার কোনো উম্মতকে পুরো দুনিয়া দিয়ে দেওয়া হয় আর সে আলহামদুলিল্লাহ বলে তাহলে এই শব্দ পুরো দুনিয়া থেকে উত্তম। অর্থাৎ, পুরো পৃথিবী পেয়ে যাওয়া এতো বড় নেয়ামত নয়, যা আলহামদুলিল্লাহ বলার মধ্যে রয়েছে। কারণ এই পৃথিবী তো একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে কিন্তু আলহামদুলিল্লাহর সওয়াব থেকে যাবে। (ইবনে মাজা)

সামুরা বিন জুনদুব রা. বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রিয় বাক্য চারটি, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার...

হাদিসে নবীজি আরো বলেছেন, যখন তুমি আলহামদুলিল্লাহ বলে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করবে তখন আল্লাহ তায়ালা নেয়ামতে বরকত দেবেন। এক হাদিসে কুদসিতে বলা হয়েছে, বান্দা যখন নামাজে ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’ বলে তখন আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে।

আসওয়াদ বিন সারিয়া রা. বলেন, বলেন, একবার আমি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললাম, আমি আল্লাহ তায়ালার শানে কিছু প্রশংসা বাক্য বলতে চাই যদি আপনার অনুমতি থাকে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহ তায়ালা নিজের প্রশংসা অনেক পছন্দ করেন। ( মুসনাদে আহমাদ, নাসাঈ)

সামুরা বিন জুনদুব রা. বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রিয় বাক্য চারটি, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার...(মুসলিম, ২১৩৭)

এনটি/